অসহায় সাবিত্রীর আকুতি

শেষ পাতা

মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ সাবিত্রী খাতুন (২৭) একজন অসহায় নারী। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে বস্তির ভাড়া করা এক ঝুপড়ি ঘরে দুই সন্তান নিয়ে বসবাস করেন তিনি। স্বামী আব্দুর রহিম বেঁচে নেই। মারা গেছেন বছর চারেক আগে। দুই সন্তান নিয়ে প্রতিবন্ধী সাবিত্রীর খুব কষ্টে দিন চলে। শুধু তাই নয়, টাকার অভাবে তিনি সন্তানদের পড়াশুনা করাতে পারছেন না। করতে পারছেন না নিজের পায়ের কোনো চিকিৎসা।
সাবিত্রী বলেন, স্বামী মারা যাবার পর বেশ কিছুদিন মানুষের বাড়িতে কাজ করেছি। কিন্তু আমার পায়ে সমস্যা থাকার কারণে আমি দ্রুত সব কাজ করতে পারি না। এজন্য বাসাবাড়ির লোকেরা আমাকে কাজে নেন না। কয়দিন কাজ করার পর আমাকে তাড়িয়ে দেন। কাজ হারিয়ে দুই সন্তান নিয়ে আমি খুব কষ্টে ছিলাম। সেসময় কেউ এগিয়ে আসেনি। সন্তানদের ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এক সময় ভিক্ষা করতে নামি। প্রতিদিন ভিক্ষা করে যা পাই তাই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে দিন যায়।’
সাবিত্রী আরও জানান, করোনার সময় কিছুদিন গৃহবন্দি ছিলেন তিনি। এসময় তার ঘরে খাবার ছিলো না। তার এমন দুর্দিনে কেউ তার ঘরে একমুঠো খাবারও দেননি। তাই মহামারির এই কঠিন সময়ে আবারো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথে পথে ঘুরে ভিক্ষা করছেন বলে আক্ষেপ করেন।
তিনি বলেন, ঘরে বসে থাকলে কেউ খাবার দিবে না। করোনায় ঘরে ছিলাম কিছুদিন। কেউ খাবার ঘরে নিয়ে যায়নি। তবে ১০ টাকা কেজি চালের সরকারি কার্ড পেয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বিধবা বা প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড পাইনি। যদি একটা কার্ড পেতাম তো দুই অবুঝ সন্তান নিয়ে একটু খেয়ে পড়ে থাকতে পারতাম।
তাই দুই সন্তান নিয়ে একটু খেয়ে পরে বেঁচে থাকার জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধিদের নিকট একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ডের দাবি করেন সাবিত্রী বেগম।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ গাজীউর রহমান ইমরান জানান, সাবিত্রী বেগমের কথা আমি জানতাম না। তিনি যদি এখানকার ভোটার হয়ে থাকেন তো তার বিষয়ে কিছু করার জন্য চেষ্টা করবো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *