মোঃ আবু হেনা, আজমিরীগঞ্জ থেকে ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় প্রশাসন তৎপর থাকলেও থেমে নেই বালু উত্তোলনকারীদের দৌরাত্ম। ঘনফুট হিসেবে রাজস্ব দিয়ে স্ক্যাচম্যাপ অনুযায়ী নদী অথবা সরকারি জায়গা থেকে বালু উত্তোলনের নিয়ম রয়েছে। অথচ ওইসব চক্র বিনা অনুমতিতে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এখতিয়ার বহির্ভূত বলে এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসনও। অন্যদিকে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর ও আশপাশ এলাকা যেমন হুমকীর মুখে পড়েছে তেমনি সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বদলপুর ইউনিয়নের তহশীলদারের কার্যালয় থেকে প্রায় ১শ মিটার দূরে গঙ্গাঁ মন্দির সংলগ্ন এলাকার কালনী-কুশিয়ারা নদী থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমান বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। প্রতিদিন হাজার হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে পাশ্ববর্তী উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পুকুর, নীচু ভূমি ভরাট করে ভিটা নির্মানের জন্য। চক্রটি প্রতি ঘন ফুট বালু ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি করছে। এ পর্যন্ত নদী থেকে প্রায় কয়েক লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়েছে। এই বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর বাঁধ। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ফসলী জমি তলিয়ে যাওয়ার। তবে স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, বালু উত্তোলন বন্ধে দায়িত্ব পালনে অনীহা রয়েছে বদলপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত তহশীলদারের।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহারপুর বাজার সংলগ্ন কালনী-কুশিয়ারা নদীতে মেশিন বসিয়ে ১০ হাজার ঘনফুট ধারণক্ষমতা সক্ষম নৌকা লোড করা হচ্ছে এবং সেই লোড করা নৌকা নদীর অপরপাড়ে (শাল্লা থানার) প্রতাবপুরে আনলোড করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বদলপুর ইউনিয়নের কর্তব্যরত তহশিলদার আব্দুস সালাম দৈনিক খোয়াইকে বলেন, ড্রেজার মালিক সুনামগঞ্জের ঠিকাদার। তিনি শাল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুবল দাসকে দায়িত্ব দিয়েছেন নদী থেকে বালু উত্তোলন করার জন্য। তারা আমাকে বলেছেন সুনামগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বালু উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। আমি সরেজমিনে গিয়ে তাদেরকে বার বার নিষেধ করেছি নদী থেকে বালু উত্তোলন না করার জন্য। বর্তমানে তারা নদীর অপরপ্রান্ত শাল্লা উপজেলার প্রতাবপুর নদীর কিনার থেকে বালু উত্তোলন করছে। এখানে আমার কিছু করার নেই।
শাল্লা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সুবল দাশের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নি। পরবর্তীতে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশ দৈনিক খোয়াইকে বলেন, বালু উত্তোলন হচ্ছে প্রতাবপুর এলাকায়, যা শাল্লা উপজেলাধীন।
শাল্লা উপজেলা নিবার্হী অফিসার আল মোক্তাদির হোসেন দৈনিক খোয়াইকে বলেন, সরকার ঘোষিত বালুমহাল থেকে ইজারার মাধ্যমে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হয়। আমার জানামতে এখানে কোন ইজারা নাই। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে তিনি ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান।

