সৈয়দ সালিক আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে আবারও অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোথাও স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি বিল আসছে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও কয়েক গুণ বেশি বিল গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। বিপিডিবি হবিগঞ্জের অধিকাংশ গ্রাহকের সাথেই ঘটছে এ ধরনের ঘটনা।
এ নিয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গ্রাহকরা।
তাঁরা অভিযোগ করেন, প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ করার পরপরই বড় অংকের টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। আবার কারিগরি ত্রুটির বাহানায় নেয়া হচ্ছে বাড়তি বিল। যেখানে আগে গড়ে ৩ হাজার টাকা রিচার্জ করলে মাস পার হয়ে যেত, সেখানে সমপরিমাণ টাকায় মাত্র ১২ থেকে ১৫ দিন যাচ্ছে। এটাকে ভৌতিক বিল বা ভুতুড়ে বিল বলেও আখ্যায়িত করছেন অনেকেই। ভুক্তভোগীরা বলছেন, বিপিডিবি অফিসে যোগাযোগ করেও খুব বেশি প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। খতিয়ে দেখার কথা বলে অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে।
হবিগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা ও তেঘরিয়া ইউপির সচিব সোহান খোয়াইকে বলেন, আগস্ট মাসে তাঁর বাসায় ব্যবহৃত মিটারে রিচার্জ করতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার টাকা। যেখানে এতদিন গড়ে প্রতি মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা রিচার্জ করলেই হত। শুধুমাত্র আগস্ট মাসেই তাকে বাড়তি বিল দিতে হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা।
তিনি জানতে চান, অতিরিক্ত এই ভৌতিক বিলের পিছনে রহস্য কী?
একই অভিযোগ শ্যামলী এলাকার বাসিন্দা মর্তুজা ইমতিয়াজের। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আগে যেখানে প্রতি মাসে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা রিচার্জ করলেই হত, এখন সেখানে হঠাৎ করেই গত মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকা রিচার্জ করতে হল।
একই এলাকার বাসিন্দা নাসির চৌধুরী খোয়াইকে বলেন, প্রতি মাসে আমাদের মিটারে রিচার্জ করতে হয় দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু গত জুলাই ও আগস্ট এ দুই মাস ধরে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা রিচার্জ করতে হল। খবর নিয়ে দেখলাম অনেক গ্রাহকেরই একই অবস্থা। বিল আগের চেয়ে দ্বিগুণ, তিন গুণ। হঠাৎ কেন এমন হলো জানি না।
নাসির আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ অফিসে গেছিলাম অভিযোগ করার জন্য, ওরা বলে গরম বাড়ছে, ফ্যান চললে বেশি বিল আসে। এসিতে কারেন্ট খায়। এসব অনেক কারণ দেখালো। আবার বলল মিটার ও সংযোগ পরীক্ষা করতে।
শহরের ফুলকলি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের শাখা ব্যবস্থাপক জানান, আমাদের এখানে ২টা এসি, ৩টা ফ্রিজ, ১টা ওভেনসহ বৈদ্যুৎতিক লাইট জ¦লে। চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত প্রতিমাসে বিল আসত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার। জুলাই মাসে ৫১ হাজার বিল পরিশোধ করতে হয়েছে। এনিয়ে বিপিডিবি’তে অভিযোগ দিলে তারা কোন সমাধান না দিয়ে জানায়, মিটারে বা ওয়ারিং এ কোন সমস্যা আছে।
বিপিডিবির হবিগঞ্জ কার্যালয়ের বিতরণ বিভাগে কর্মরত কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতি মাসে অনেক গ্রাহক অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা নিয়ে কার্যালয়ে আসেন। এসকল সমস্যা নিয়ে আমরা নিজেরাই বিব্রত।
এবিষয়ে হবিগঞ্জ বিপিডিবি এর সহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান খোয়াইকে জানান, প্রিপেইড মিটার কেন্দ্রীয়ভাবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সেটআপ করা। এখানে আমাদের কিছু করার নাই। প্রত্যেকে নিজ নিজ মিটার ও বাসার লাইন চেক করে নিতে হবে।