ভাগ্যক্রমে বাঁচলেও সেই ভয়াল চিত্র ভেসে উঠলে এখনও ঘুমাতে পারেন না মিনতি

প্রথম পাতা

এসএম খোকন, বানিয়াচং থেকে ॥ ’৭১ এর ১৮ আগস্ট। বানিয়াচংয়ের মাকালকান্দি গ্রামে চন্ডি মন্দিরে চলছিল পূজার প্রস্তুতি। কেউ সাজাচ্ছিলেন পূজোর থালা। অনেকেই ব্যস্ত ফুল সংগ্রহে। এরই মাঝে ঝাপিয়ে পড়ে পাক বাহিনী। শুরু হয় গুলিবর্ষণ। ৪৪ নারীসহ ৭৮ জন নিরপরাধ হিন্দুকে নির্বিচারে হত্যা করে হায়েনার দল। লাশগুলো ভাসিয়ে দেয়া হয় পানিতে।
সেই লাশের মিছিল স্বচক্ষে দেখেছেন মিনতী রাণী পাল। এমনকি মানুষরূপী পশুদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মিনতীর শিশু বাচ্চাও। হত্যার পর শিশুটিকে ফেলে দেয়া হয় নদীতে। দৈনিক খোয়াইকে ভয়াল সেই দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন মিনতি।
একই ঘটনার স্বাক্ষী জয়তারা। আজও বেঁচে আছেন লোমহর্ষক ঘটনার স্মৃতি নিয়ে। জয়তারার তিন বছরের বাচ্চাকে টেনে নিয়ে বুটের নিচে পিষ্ট করে হত্যা করে হানাদারবাহিনী। গুলি করে হত্যা করা হয় তার মেয়ে, স্বামী ও ভাইকে। লাথি মেরে ফেলে দেয়া হয় তাকেও। তবে বেঁচে যান ভাগ্যগুণে। ওই দৃশ্য মনে হলে এখনও ঘুমাতে পারেননি বলেও জানিয়েছেন জয়তারা।
নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া প্রাননাথ দাস বলেন, সবাই ব্যস্ত ছিল পূজো নিয়ে। সকাল নয়টায় পাকিস্তানীরা আক্রমণ করে গ্রামে। পাখির মতো মারতে থাকে মানুষ। কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে ভাগ্যগুণে প্রাণে রক্ষা পায়। তবে মেরে ফেলা হয়েছে ৭৮ জনকে।
তিনি বলেন, আমার চোখের সামনে বাবা বোন ফুফুসহ অনেককেই মরতে দেখেছি। কাতরাতে দেখেছি মৃত্যু যন্ত্রণায়। তখন নৌকা থেকে বেরিয়ে আসা রাজাকার ফজলুল হককে আমি পরিচয় দেই আমি মুসলমান। তখন তারা আমাকে ছেড়ে দেয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *