হবিগঞ্জে কোরবানীর চাহিদার তুলনায় বেশি গরু উৎপাদন

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জে পশুর হাটগুলো জমে উঠছে। আকর্ষণীয়ভাবে গরু ছাগলকে সাজাতে খামারীরা ব্যস্ত দিন পার করছেন; ক্রেতারা হাট-বাজারে ঘুরছেন পছন্দসই গরু কেনার উদ্দেশ্যে।
এবার কুরবানীর ঈদে জেলায় গরুর চাহিদা ৯০ হাজার। তবে গরু উৎপাদন হয়েছে চাহিদার চেয়েও বেশি প্রায় ১ লাখ ৬ হাজারটি।
এদিকে, চামড়া সংরক্ষণ ও বিপননের বিষয়ে ট্যানারী মালিকদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস খোয়াইকে জানান, এ বছর কুরবানীর ঈদে হবিগঞ্জ জেলায় গরুর চাহিদা ৯০ হাজার। অন্যদিকে খামার ও পারিবারিকভাবে উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজারটি গুরু। জেলায় তালিকাভুক্ত খামারী ৬ হাজার ৫০০ জন। স্থায়ী এবং অস্থায়ী মিলে গরুর হাট বসবে ৫৪টি। তাছাড়া প্রতিটি হাটে এক থেকে দুটি ভেটেনারী মেডিকেল টিম কাজ করবে।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার চানপুর গ্রামের নেহার এগ্রো খামাড়ে এ বছর দেড় শতাধিক গরু ও মহিষ বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২০/২৫টি মহিষ ও গরু বিক্রি করেছেন খামারের মালিক। ২০২১ সালে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মজনু মিয়া নেহার এগ্রো খামারটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পরের বছর খামারটিতে দেশীয় প্রযুক্তিতে লালন পালন করে দেড় শতাধিক গরু ও মহিষ বিক্রি করা হয়। এ বছরও খামারে দেড়শতাধিক গরু ও মহিষের লালন পালন করা হয়েছে।
নেহার এগ্রোর পরিচালক তৌহিদ মিয়া জানান, দেশীয় পদ্ধতিতে তাঁদের খামারের পশুর লালন-পালন ও খাবার খাওয়ানো হয়েছে। তবে বাজারে পশুর খাদ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় যে পরিমান টাকা খরচ হয়েছে; সেই অনুযায়ী পশুর দাম বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, তাঁর খামারে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা দামের মহিষ ও গরু রয়েছে। এছাড়াও সর্বনি¤œ ১ থেকে দেড় লাখ টাকার মহিষ, গরু ১ থেকে দেড় লাখ টাকা দামের রয়েছে। সেইগুলো কোরবানীর হাটে তোলা হবে। তবে অনেকেই খামাড় থেকে গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নূরপুর ডেইরী পিজিও লাইভস্টক ফার্মারস এবার বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে ৪৫টি গরু। সবগুলো বিদেশি জাতের। খামাড়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কালা মিয়া। তার মৃত্যুর পর তার পুত্রবধু পারুল বেগম খামাড়টি পরিচালনা করছেন।
তিনি জানান, তার খামারে তিনজন শ্রমিক কাজ করছেন। তাদের মজুরীর পাশাপাশি খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরুর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ বছর গত বছরের চেয়ে বেশি দামে গরু বিক্রি করতে হবে। মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামে অবস্থিত জেলার সবচেয়ে বড় গবাদি পশুর খামাড়ের মালিক মোন্তাকিম চৌধুরী বলেন, এ বছর তাঁর খামার থেকে শতাধিক গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। অনেকেই খামাড়ে এসে তাদের পছন্দের গরু বুকিং দিচ্ছেন। তিনি বলেন, দাম কমার পাশাপাশি গবাদী পশুর খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদেরকে।
হবিগঞ্জ শহরের উমেদনগর এলাকায় শৌখিন খামারি মরতুজ আলীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে একটি শেডে এবার পালন করেছেন ১১টি ষাড়। প্রতিটি ২ থেকে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
বানিয়াচং উপজেলার কাটখাল গ্রামের লুৎফুর রহমানের খামাড়ের ১২টি ষাড় এবার বিক্রি হবে ঈদের বাজারে। তিনি জানান, তার খামাড়ের সবগুলো দেশী জাতের ষাড়। ঘাষ এবং প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে এগুলো লালন পালন করেছেন। ভাল দামের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *