নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ সরকারি কলেজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাপারে ছাত্র আন্দোলনের মুখোমুখি হলেন কলেজটির অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেনের উপস্থিতিতে কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসেন। তখন সবার সামনে দুর্নীতির ব্যাপারে সদুত্তর দিতে অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান ব্যর্থ হয়েছেন।
ভর্তি, মাসিক বেতন, শিক্ষা সফর, অর্থ তহবিল, ব্যাংকিং খাত, শিক্ষকদের ক্লাস ফাঁকি দেওয়া, বিভিন্ন কমিটির আর্থিক অনিয়ম, কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনসুর, সাধারণ সম্পদক আবু মেহের পনিরের দলীয় প্রভাব খাটানো এবং অবৈধভাবে পুকুরের মাছ লুটসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ সভায় তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষার্থী শাহ তালহা ব্যাংকিং খাতে টাকা আত্মসাতের প্রমাণ হিসেবে একজন শিক্ষক ও অধ্যক্ষর বক্তব্য পেশ করেন। নিজেদের দুর্নীতির দায় থেকে মুক্ত করতে সেই শিক্ষক ও অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের বলেছিলেন ‘ব্যাংক কর্মকর্তারা (অগ্রণী ব্যাংক) অর্থ দুর্নীতির সাথে জড়িত। তাঁদের মাধ্যমেই নাকি ব্যাংকের রিসিপ্ট জালিয়াতি করা হতো এবং সেজন্যেই কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাংক স্টেটমেন্ট নেই।’
শিক্ষার্থী রুমান আহমেদ তালুকদার ফরম ফিলাপের টাকা আত্মসাতের বিষয় তুলে ধরে বলেন, অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁর অধীনস্থ শিক্ষকদের নাম প্রকাশ করেছেন, যারা সরাসরি দুর্নীতির সাথে জড়িত। শিক্ষকরা ফরম ফিলাপের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে কলেজের কম্পিউটারে এন্ট্রি দিয়ে দিতেন। অধ্যক্ষসহ কিছু শিক্ষক কলেজের বাইরের এক দোকানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে টাকা আদায় করতেন। অধ্যক্ষ কলেজের ফরমসহ যে কোনো কাগজ শিক্ষার্থীদের বাধ্য করতেন সেই দোকান থেকে কিনে নিতে এবং সেই দোকানিকে বলে দিতেন টাকার পরিমাণ কত রাখবে তাঁরা। সে দোকান থেকে কমিশন পেতেন তারা। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন দোকানের মালিক।
এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি অধ্যক্ষ। তবে আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ ও শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষা সফরে যাওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।