আজমিরীগঞ্জে দুর্গাপূজার সরকারি বরাদ্দ নিয়ে বাণিজ্য

প্রথম পাতা

মোঃ আবু হেনা, আজমিরীগঞ্জ থেকে ॥ আজমিরীগঞ্জে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩৫টি মন্ডপের জন্য সরকারের দেয়া বরাদ্দের চাল গুদামে রেখেই কেনাবেচা করে লাভ গুণে নিয়েছেন উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম ৪২ থেকে ৪৫ টাকা হলেও মন্ডপের জন্য বরাদ্দ হওয়া ১৭ মেট্রিক টন চাল তিনিসহ দুইজন কিনে নিয়েছেন ৩৪ টাকা কেজিতে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ভাষ্যে এটি অপরাধমূলক কাজ। কিন্তু গুদামে রেখেই চাল কেনাবেচার বিষয়টিকে অভিযুক্ত প্রদীপ রায় স্বীকারও করেছেন। এনিয়ে বঞ্চিত উপকারভোগীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, এবারের দুর্গাপূজায় আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ৩৫টি মন্ডপে ৫শ’ কেজি করে মোট ১৭ হাজার ৫শ’ কেজি চাল বরাদ্দ আসে। এ চাল বিতরণের ডিও এখনও উপকারভোগীদের নিকট হস্তান্তর হয়নি। কিন্তু উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় মৌখিকভাবে কেনাবেচার মাধ্যমে মন্ডপগুলোর পরিচালকদের হাতে ৩৪ টাকা কেজি দরে টাকা বিতরণ করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম (মোটা) ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। সেই হিসেবে ১৭ হাজার ৫শ’ কেজি চালের দাম ৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অথচ প্রদীপ রায় ও তার আরেক সহযোগী ৩৪ টাকা কেজি দরে ৩৫টি পূজা মন্ডপে ৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বিতরণ করে ফেলেছেন। এখন তারা ডিও হাতে পেলে গুদান থেকে চাল উত্তোলনের অপেক্ষায়। এনিয়ে উপকারভোগী পূজারীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাহাড়পুর কায়স্থহাটি পূজা মন্ডপের দায়িত্বে থাকা একজন বলেন, সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়া চালের বাজার মূল্য কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা। কিন্তু নেতৃবৃন্দ আমাদেরকে দিয়েছেন ১৭ হাজার টাকা। বাকীটা তারা ভাগ করে নিয়েছেন।
অভিযুক্ত প্রদীপ রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বরাদ্দ হওয়া ১৭ হাজার ৫শ’ কেজি চালের মধ্যে আমি কিনেছি ৯ টন। বাকীটা নিয়েছেন ওবায়দুর নামে অন্য আরেকজন। প্রতিবারই তারা এমন করে থাকেন বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জীবন চন্দ বলেন, সাধারণ সম্পাদককে আমি বারণ করেছি। তারপরও তিনি চাল ক্রয় করেছেন। পূজা উদযাপন পরিষদ নেতা হওয়া সত্ত্বেও এমন কাজ করা তার ঠিক হয়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনও চালের ডিও হস্তান্তর করা হয়নি। কিন্তু চাল গুদামে রেখেই তার কেনাবেচার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *