খুন হওয়া বাবাকে দাফন, মেয়ের জীবনও সংকটে

প্রথম পাতা

বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচংয়ে পৈত্রিক বসতভিটা ভাগ করা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ছোট ভাইয়ের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বড় ভাই খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের ও নিহতের ভাবীকে কারাগারে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে।
নিহত নশেদ মিয়ার স্ত্রী লং ভানু গতকাল বুধবার বানিয়াচং থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী দিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ভাইয়ের হাতে খুন হওয়া ৪৫ বছর বয়সী নশেদ বানিয়াচং উপজেলার দোয়াখানী মহল্লার মৃত কিম্মত আলীর ছেলে।
এদিকে, হত্যাকান্ডে প্রধান অভিযুক্ত ও নিহতের ছোট ভাই জুহেদ মিয়ার স্ত্রী আহমিনা বেগমকে গত মঙ্গলবার ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। গতকাল জেলা কারাগারে ওই নারীকে হত্যা মামলায় শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে।
নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তফিক মিয়া, নশেদ মিয়া ও জুহেদ মিয়া আপন তিন ভাই। সম্প্রতি জুহেদ বিদেশ থেকে ফিরলে পৈত্রিক ভিটা ভাগ করা নিয়ে বড় দুজনের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে নশেদ মিয়া ও তাঁর বড় ভাই তফিক মিয়ার ওপর তাদের ছোট ভাই জুহেদ মিয়া হঠাৎ আক্রমণ করেন। প্রথমে নশেদের পেটে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে বড় ভাই তফিক মিয়া ও নশেদ মিয়ার মেয়ে ফাহিমা আক্তারকে (১৬) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তিনি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, তফিক মিয়া, নশেদ মিয়া ও জুহেদ মিয়ার মা মারা যাওয়ার আগে বসত ভিটা থেকে ২ শতক জায়গা আলাদাভাবে জুহেদ মিয়ার নামে লিখে দিয়ে যান। সেখান থেকেই বিরোধ তৈরি হয়।
আগের বিরোধ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলাকালে গত সোমবার বাড়ির টিউবওয়েল মেরামত বাবদ খরচের ৩০০ টাকা চাইতে জুহেদ মিয়ার নিকট গিয়েছিলেন নশেদ। তখন ক্ষুব্ধ হয়ে জুহেদ তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন এবং অন্যদের উপর আক্রমণ করেন।
আহমিনা বেগমকে শ্যোন এরেস্ট দেখানোর সত্যতা নিশ্চিত করে হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম খোয়াইকে জানান, হত্যা মামলার অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, ময়না তদন্ত শেষে নশেদ মিয়ার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এদিকে, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত তাঁর মেয়ে ফাহিমা আক্তারের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় আসামীরা হলেন, জুহেদ মিয়া, তাঁর স্ত্রী আহমিনা বেগম, প্রতিবেশী হৃদয় মিয়া ওরফে সোহাগ মিয়া, নুরুল ইসলাম, হামদু মিয়া, আলফু মিয়া ও আখিনা বিবি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *