স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে তিন উপজেলার ১৩টি স্থানে খোয়াই নদীর বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে; একটি স্থানে বাঁধ ভেঙে অনবরত হাওরে পানি ঢুকলেও নদীর পানি বৃদ্ধি হ্রাস পাচ্ছে না।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ ও চুনারুঘাট উপজেলায় খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ফলে সদর উপজেলার তেঘরিয়া, গোপায়া, লস্করপুর, তেতৈয়া, মশাজান, ভাদৈ; শায়েস্তাগঞ্জের চর হামুয়া, কলিমনগর, বাতাস্বর, পাইকপাড়া, রাঙ্গেরগাঁও এবং চুনারুঘাট উপজেলার রামশ্রী, করিমপুর ও গাজীগঞ্জে খোয়াই নদীর বাঁধ উপচে লোকালয়ে ও হাওরে পানি প্রবেশ করছিল।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় অনেক বসতবাড়ি প্লাবিত হচ্ছে। লোকজন গবাদি পশু ও জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন।
স্থানীয়রা জানান, টানা দুদিন ধরে জালালাবাদ এলাকায় খোয়াই নদীর বাঁধে প্রায় ২০০ ফুট প্রস্থ ভাঙন দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করছে। এ পানি হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও বানিয়াচং উপজেলার হাওরে যাচ্ছে।
গতকাল রাতে জেলা প্রশাসন থেকে তথ্য দেওয়া হয় বন্যার পানিতে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, মাধবপুর, চুনারুঘাট ও নবীগঞ্জ উপজেলার ৩৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি। প্রস্তুত করা ১৬৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে তাঁদের ১৪০টি পরিবার ওঠেছেন। বন্যা কবলিতদের জন্য সরকারি ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল, ১ হাজার ৬০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ খোয়াইকে জানান, গতকাল রাতে চুনারুঘাটের বাল্লা পয়েন্টে খোয়াই নদীর পানি বিপদসীমার ২৭৭ সেন্টিমিটার, শায়েস্তাগঞ্জে ১৭৩ সেন্টিমিটার ও সদর উপজেলার মাছুলিয়া পয়েন্ট ১৭৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।
গতকাল রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত শহরতলীর আনোয়ারপুর এলাকার বেশ কিছু বাড়িঘর নদীর বাঁধ উপচে আসা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দোকানপাট ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে, বন্যা কবলিতদের সহায়তায় বানিয়াচং ব্যতিত জেলার অন্য ৮টি উপজেলায় ৮৯০ জন ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। তাঁরা মাঠ পর্যায়ে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা করবে। ভলান্টিয়ারদের মধ্যে মাধবপুরে ১৩৮ জন, চুনারুঘাটে ১১০ জন, বাহুবলে ৪০ জন, নবীগঞ্জে ১৪০ জন, আজমিরীগঞ্জে ১১০ জন, লাখাইয়ে ৮০ জন, শায়েস্তাগঞ্জ ৫১ ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ২২১ জন।