বদরুল আলম ॥ নবীগঞ্জ উপজেলায় খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে আসা পাহাড়ি বানরকে পিটিয়ে জখম করেছে এলাকার কিছু লোক। আহত বানরটি পাঁচদিন ধরে চিকিৎসাধীন আছে।
হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এর পরিচর্যা করছেন। আঘাতে ডান চোখের উপরের দিকে মাথার খুলি ও বাম হাত ফেটে গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে আহত বানরের শারীরিক অবস্থা এবং আচরণের কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ফরেস্টার তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী দৈনিক খোয়াইকে জানান, এটি মধ্যবয়সী পুরুষ বানর। চারদিন পূর্বে খাবারের সন্ধানে নবীগঞ্জ উপজেলার বড়চর এলাকার লোকালয়ে আসে। তখন কিছু লোক এটিকে পিটিয়ে জখম করেছে। পরে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক জাকির হোসেন নিজের বাড়িতে এনে খাবার খাওয়ানোর পর ওইদিনই বানরটিকে হবিগঞ্জ বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিকট হস্তান্তর করেছেন।
তিনি আরো জানান, আঘাতে বানরটির ডান চোখের উপরের দিকে মাথার খুলি ও বাম হাত ফেটে গেছে। চারদিন ধরে চিকিৎসা চলছে। শুরুর দিকে আহত বানরের আচরণ অস্বাভাবিক ছিল। তবে শুক্রবার রাতে শারীরিক ও আচরনগত উন্নতি ঘটেছে। আরো সুস্থ হয়ে উঠলে রবিবার (২৩ আগস্ট) এটিকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উদ্ধারকারী কলেজ শিক্ষক জাকির হোসেন দৈনিক খোয়াইকে জানান, আহত বানরটিকে এলাকার একদল কিশোর দৌড়াচ্ছিল। আমি দেখতে পেয়ে এদের কবল থেকে এটিকে উদ্ধার করি। খাবার খাওয়ানোর পর বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরে খবর দিলে তারা এসে বানরটি নিয়ে গেছেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর আজীবন সদস্য ড. জহিরুল হক শাকীল দৈনিক খোয়াইকে বলেন, বানর অত্যন্ত বুদ্ধিমান একটি প্রাণী। সাম্প্রতিককালে বনভূমি উজার ও মানুষরে আচরণে এরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বনাঞ্চলে হয়তো কমে গেছে এদের খাবারও। খাবারের সন্ধানে আসা বানরটিকে পিটিয়ে জখম করা অত্যন্ত দুঃখজনক। বন্যপ্রাণী রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের পাশাপাশি সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকেই সচেতন হতে হবে।