স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে ‘চটিপড়া’ অর্থাৎ প্রাচীন প্রথায় চোর ধরার নামে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি ও মানহানীর অপরাধে চার ব্যক্তিকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
গতকাল মঙ্গলবার হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ছিফাত উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী এমএ মজিদ জানান। সাজার আদেশপ্রাপ্তরা হলেন, ‘চটিপড়া’ প্রয়োগকারী ব্যক্তি জেলার বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া গ্রামের মাওলানা কাসেম বিল্লা নোমান, এ কাজে যুক্ত ‘যাজক’ বা ‘তুলারাশি’ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের গদাইনগর গ্রামের রুবেল মিয়া, ভঙ্গুরহাটি গ্রামের জামাল মিয়া ও কাটাখালী গ্রামের জহিরুল ইসলাম রাসেল।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট জহিরুল ইসলাম রাসেলের দোকানে চুরি হয়েছে অভিযোগ করে ‘চটিপড়ার’ মাধ্যমে চোর ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এ প্রথার নিয়ম হচ্ছে, একজন হুজুর লাঠি অথবা লাঠির তৈরী কিছু একটাতে টুটকা করে দিবেন এবং অন্য আরেকজন সেটি নিয়ে যার শরীরে আঘাত করবেন সে চোর বলে গণ্য হবে। চোরকে আঘাত করার কাজটি যিনি করবেন তাঁকে বলা হয় ‘তুলারাশি’ বা ‘যাজক’।
সেদিন বিল্লাহ নোমান ‘চটিপড়া’ দেন এবং রুবেল মিয়া ও জামাল মিয়া ‘তুলারাশির’ দায়িত্ব পালন করেন।
প্রাচীন প্রথায় জড়িতরা নিতাইরচক গ্রামের এক ব্যক্তিকে চোর হিসেবে চিহ্নিত করলে এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয় এবং পরে দোষী স্বাব্যস্ত ব্যক্তি আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এক বছর পর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে কাসেম বিল্লাহ নোমান ও জহিরুল ইসলামকে ৬ মাস এবং রুবেল মিয়া ও জামাল মিয়াকে ২ মাস করে কারাদ-ের আদেশ দেন। একই সঙ্গে কাসেম বিল্লাহ নোমান যেন ভবিষ্যতে এমন কাজ না করেন সেজন্য আদালত মুচলেকা দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এমএ মজিদ বলেন, “সাজার আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা রায় ঘোষণার পর উচ্চ আদালতে আপীলের শর্তে জামিন পেয়েছেন।”