সৈয়দ সালিক আহমেদ ॥ হবিগঞ্জে খোয়াই ও কুশিয়ারা নদীসহ অন্যান্য নদনদীর পানি কমে বিপদসীমার নিচে নেমেছে। বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন লোকজন।
তবে পানির স্রোতে বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাড়ি ফিরেও মাথা গোঁজার ঠাই পাচ্ছেন না অনেকে। কিছু লোক ভিটেমাটি সব হারিয়েছে; পলি জমে রয়েছে কারও বসতঘরে।
জেলা সদরের মধ্যে বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জালালাবাদ এলাকা। ফলে অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল লোকজন বন্যা পরবর্তী ধাক্কা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন। তাঁরা এখন খাওয়ার জন্য ত্রাণ চায় না; ঘর মেরামতের জন্য প্রয়োজন টাকার।
গতকাল রবিবার জালালাবাদ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পানি নেমে যাওয়ার পর শতাধিক পরিবার বসতঘর মেরামতের কাজ করছেন। পরিবারে পুরুষ সদস্যরা বসতঘর মেরামত করছেন; আর নারীরা মালামাল ও আসবাবপত্র রোদে মেলে দিচ্ছিলেন। কিছু লোককে ঘর মেরামতের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়।
গ্রামের কয়েকজন জানান, কলেজের ছাত্ররা তাঁদের একদিন খাবার দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন ত্রাণ পাননি। আর এখন ত্রাণের প্রয়োজন। নারী-শিশুকে নিরাপদ মাথা গোঁজার ঠাই দিতে দরকার টাকার।
খুদেজা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘হঠাৎ বাড়িতে পানি আসায় ঘরের মালামাল নিয়ে বের হতে পারিনি। ছেলে-মেয়ের সাথে শহরে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছিলাম। বাড়ি ফিরে দেখি সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। রোদে শুকিয়ে কতটুকু রক্ষা হয় সেজন্য চেষ্টা করছি।’
আছিয়া খাতুনের ঘরে পলি জমে আছে। কোদাল দিয়ে সেগুলো অপসারণের চেষ্টা করছিলেন। তাঁর রান্না করার জায়গাটিও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘রান্না করার মত জায়গা নেই। মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় ঘরের খুটিতে হাত দিলেই পড়ে যায়। অন্যের বাড়িতে কয়দিন থাকব? তাই ঘর মেরামতের চেষ্টা করছি। তবে এতে এক সপ্তাহ সময় লাগবে।’
জালালাবাদ গ্রামের আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘আমরা ত্রাণ চাই না, চাই ঘর মেরামত করে ছেলে মেয়েকে নিয়ে থাকতে।