স্টাফ রিপোর্টার ॥ বন্যায় হবিগঞ্জের প্রাণিসম্পদ ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসেবে জেলায় ক্ষতির পরিমাণ ৩২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫০ টাকা হলেও বাস্তবে ক্ষতির অঙ্ক আরও বড় হতে পারে।
সরকারি হিসেবে জেলায় ৪০ টি গবাদি পশুর খামারে ক্ষতি হয়েছে ১৪ লাখ ৯৮ হাজার, হাঁস-মুরগীর ৩৫ খামারে ১০ লাখ ৯১ হাজার ও ২১ টন গোখাদ্য (খড়) যার মূল্য ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা ও ৬৯ হাজার ৫০০ টাকার ঘাস নষ্ট হয়। পশুপাখি মারা যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আরও ৪ লাখ ৭৮ হাজার ৫৫০ টাকার।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেবে, জেলার ১৭টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত হয়। এরমধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪টি, মাধবপুরে ৭টি, বাহুবলে ৩টি এবং চুনারুঘাট উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন রয়েছে।
বন্যায় সদর উপজেলায় ১৫টি ছাগল, ৯৩৫টি মুরগী ও ৮৪০টি হাঁস মারা গেছে। এছাড়া মাধবপুরে ২টি ছাগল, ১ হাজার ৯৫০টি মুরগী ও ১ হাজার ৪০৮টি হাঁস; বাহুবলে মুরগী ১২৫টি ও হাঁস ১২৮টি; চুনারুঘাটে ৩টি গরু, ২২টি ছাগল, ২০০টি মুরগী ও ৩২০টি হাঁস মারা গেছে।
এদিকে, জেলায় ৪০টি গবাদি পশুর খামার ও ৩৫টি হাঁস-মোরগের খামার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলায় গবাদি পশুর খামার ১৪টি ও হাঁস-মোরগের খামার ৯টি; মাধবপুরে গবাদি পশুর খামার ১৫টি ও হাঁস-মোরগের খামার ১০টি; বাহুবলে গবাদি পশুর খামার ৬টি ও হাঁস-মোরগের খামার ৮টি এবং চুনারুঘাট উপজেলায় গবাদি পশুর খামার ৫টি ও হাঁস-মোরগের ৮টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার খামারি আছকির মিয়া জানান, তাঁর খামারের পশুখাদ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক টাকার খাদ্য বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।
জালালাবাদ এলাকায় মোরগের খামারী বশির মিয়া জানান, হঠাৎ বন্যার পানি এসে তাঁর খামারটি ভাসিয়ে নেয়। ফলে ৫৫টি মোরগ মারা গেছে। আসবাবপত্র বানের জলে ভেসে গেছে।
খামারীরা জানান, তাঁদের এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পাননি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আব্দুল কাদের খোয়াইকে জানান, বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলো থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য যোগাড় করে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত কোন সহায়তা আসেনি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের বন্যা মোকাবিলায় সঠিক পরামর্শ ও ভ্যাকসিন সহায়তা দেওয়া হয়েছে।