শিব্বির আহমদ আরজু, বানিয়াচং থেকে ॥ গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অহিংস মিছিলের ডাক দেয়। রঙমিস্ত্রী তোফাজ্জল মিয়া (২২) মাতৃভূমিকে স্বৈরশাসনের কবল থেকে রক্ষার জন্য সেই ছাত্র-জনতার মিছিলে যোগ দেন; সেখানেই বুলেটবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
তোফাজ্জল বানিয়াচং উপজেলায় জাতুকর্ণপাড়ার আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে। তিন ভাই ও বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট; গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার সময় তাঁর বিয়ের বয়স মাত্র দেড় মাস। স্ত্রীর হাতে মেহেদীর দাগ শুকানোর আগেই তিনি বিধবা হলেন।
তোফাজ্জল পাশের বাড়ির আব্দুল গণির মেয়ে শাহিনা আক্তারকে (২০) দেড় মাস আগে বিয়ে করেন। একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দুজন আলাদা সংসার পাতেন। দেড় মাসের মাথায় গত পাঁচ আগস্ট বানিয়াচং থানার সামনে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
নিহতের পরিচিতজনেরা জানান, শাহীনা পছন্দের ছেলে তোফাজ্জলকে বিয়ে করেও এভাবে হারাতে হল; স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঘটনার ক’দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর কান্না থামেনি। বিলাপ করে কাঁদছেন। পরিবারের অন্য সব সদস্যও শোকে স্তব্ধ। দু’টি পরিবারে নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া হচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানান, তোফাজ্জলের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের দেওয়া অর্থসহায়তা তাঁর পিতামাতা গ্রহণ করছেন। কিন্তু শাহিনা আক্তার ও তোফাজ্জলের সংসার আলাদা হলেও শাহীনা কোন সহযোগিতা পাচ্ছে না। তাঁকে সহযোগিতা করার জন্য এলাকাবাসী আহবান জানিয়েছেন।