বাহার উদ্দিন, লাখাই থেকে ॥ বর্ষায় হাওরের শান্ত জলে শান্তশিষ্টের মতোই দাঁড়িয়ে থাকে হিজল আর করচ গাছ। কোথাও একাকী আবার কোথাও সারিবদ্ধ। হেমন্তে হাওরের পানি শুকিয়ে চারদিকে যখন বোরো জমিতে পরিণত হয়, তখনো একইভাবে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে এ দুই প্রজাতির গাছ। এটি হাওরাঞ্চলের চিরপরিচিত নৈসর্গিক দৃশ্য।
এক সময় লাখাই উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওর জুড়ে ছিল এসব গাছ। অথচ মানুষের অত্যাচার আর নির্বিচারে বর্তমানে গাছগুলো তেমন চোখে পড়ে না। প্রশাসনের উদাসীনতায় এ উপজেলায় হিজল-করচ আজ বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে লাখাই’র হাওরগুলোতে অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থান, খালের পাড়, নদীর তীরে সারি সারি হিজল গাছ ছিল। গেল কয়েক বছর ধরে কারণে-অকারণে কাটা হচ্ছে এসব গাছ। অনেকে বিলে মাছ সংরক্ষণের জন্য করচ গাছ কেটে ব্যবহার করছেন। যে কারণে হাওরে সৌন্দর্য্যরে অনুষঙ্গ এই বৃক্ষকূল আজ বিলুপ্তির পথে।
পশু-পাখিদের আশ্রয়স্থল ও বর্ষায় হাওরের নৌকারোহীদের পথ প্রদর্শক ছিল এ গাছ। ঝড়ের কবলে পাড়া মানুষদেরও আশ্রয়স্থল এগুলো। অন্যদিকে মাটির ক্ষয়রোধ এবং বাঁধ রক্ষার কাজে লাগে এসব বৃক্ষ। অথচ দিন দিন হারিয়ে গেলেও হিজল-করচ গাছ সংরক্ষণে উদ্যোগ নেই স্থানীয় প্রশাসনের।
অনেকেই বলছেন, খোয়াই নদীর লাখাই অংশে বাঁধ মেরামত হচ্ছে। এই বাঁধে হিজল এবং করচ গাছ লাগালে অনেক মজবুত হতে পারতো। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।