লাখাই প্রতিনিধি ॥ লাখাই উপজেলায় সরকারি খাল লিজ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। মাছ ধরা অথবা নৌকাযোগে সেখানে নামলেই সাধারণ মানুষদের দেয়া হচ্ছে মারধরের হুমকি।
সরকারি খালটির প্রিন্ট পর্চার মন্তব্য কলামে লেখা আছে ‘সাধারণ নৌ চলাচল ও জল সেচের প্রয়োজন হেতু বন্দোবস্ত বহির্ভুত’। যেখানে সরকারিভাবেই এটি বন্দোবস্ত দেয়া হবে না, সেখানে এলাকার কিছু লোক খালটি লীজ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিল। এমন ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিকার চেয়ে গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর আবেদন করেছেন সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধিসহ অর্ধশতাধিক মানুষ। সরেজমিনে পরিদর্শনের পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ইউএনও।
লিখিত অভিযোগ এবং অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম বুল্লা গ্রামের ‘কালিয়াদারা পুরান খাল’ নামে সরকারি খালটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। বর্ষাকালে নৌকা চলাচলসহ খাল থেকে পানি সেচ ও মাছ ধরেন গ্রামবাসী। সম্প্রতি লাখাই উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের বলু মিয়া, আশরাফ উদ্দিন, শালদিঘা গ্রামের নোয়াব আলী, জয়শদ ও রাসেলসহ কিছু লোক খালটি নিজেদের দখলে নিয়ে নেন। এলাকায় প্রচার করেন ৭০ হাজার টাকায় এটি লীজ নিয়েছেন। বাঁশের খুঁটি ও ডালপালা ফেলে বন্ধ করে দেয়া হয় নৌ চলাচল। সাধারণ মানুষজন খালে নামলেই বলু মিয়া এবং তার লোকজন মারধরের হুমকি দিচ্ছেন।
‘কালিয়াদারা পুরান খাল’ বুল্লা মৌজার ১নং খতিয়ানের ২৬০, ২০ এবং শালদিঘা মৌজার ১নং খতিয়ানের ৫৮৮নং দাগে অবস্থিত। এ খালের আরএস জরিপের প্রিন্ট পর্চায় দখল বিষয়ক বা অন্যান্য বিশেষ মন্তব্য কলামে লেখা রয়েছে ‘সাধারনের নৌ চলাচল ও জল সেচের প্রয়োজন হেতু বন্দোবস্তের বহির্ভূত’। অর্থাৎ উক্ত খালটিকে কোনভাবেই ইজারা দেয়া যাবে না।
স্থানীয়রা জানান, সরকারিভাবেই খালটি ইজারা না দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অথচ ওই প্রভাবশালী চক্র খালটি দখল করে সাধারণ মানুষদের নিকট ৬০ হাজার টাকায় লিজ দিয়েছেন। আবার খালে নামলে এলাকাবাসীকে মারধরেরও হুমকি দিচ্ছেন। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বলু মিয়া দৈনিক খোয়াইকে জানান, এই খাল দীর্ঘদিন ধরে আমরা গ্রামের পক্ষে ব্যবহার করে আসছি। জনসাধারণের মাঝে লীজ দিয়ে আয় হওয়া টাকা দেয়া হচ্ছে মাদ্রাসায়। এছাড়া খালের পাড়ে অবস্থিত জমিগুলো তাদের বলে এই খালটি তারা ব্যবহার করছেন বলেও যুক্তি দেখান বলু।
লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (্ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং এ ব্যাপারে দৈনিক খোয়াইকে বলেন, তদন্তের জন্য অভিযোগের কপি সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন শেষে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাচ্চু মিয়া, নারী ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম, সাবেক ইউপি সদস্য জাহারুল ইসলাম তাউছ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ভেলু মিয়াসহ অর্ধশত মানুষ।