সবুজ শহর গড়ার শ্লোগান নিয়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার বাজেট

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সবুজ, পরিচ্ছন্ন ও দক্ষ শহর গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে হবিগঞ্জ পৌরসভার ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকালে পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম সংবাদ সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষণা করেছেন।
বাজেটে ৪৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৬ হাজার ৭৪৮ টাকা আয়ের বিপরীতে ৪৭ কোটি ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ১৪৯ টাকা ব্যয় এবং উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৯ টাকা। উন্নয়ন খাতে ৩৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা আয়ের বিপরীতে একই পরিমাণ টাকা ব্যয় ধরা হয়।
উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা। কোভিড-১৯ প্রকল্পের রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্যানিটেশন ৫ কোটি। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সৌরচালিত সড়কবাতি স্থাপন ও ড্রেন নির্মাণ ১০ কোটি টাকা। রুরাল এক্সেস রোড ইমপ্রোভম্যান্ট প্রজেক্ট ইন সিলেট ডিভিশন-এর রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ১০ কোটি টাকা।
উন্নয়ন খাতে আয়বর্ধক খাতগুলো হল, এডিপি ও রেভিনিউ, কোভিড-১৯ প্রকল্প, পৌরসভা পানি ও স্যানিটেশন প্রকল্প, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রকল্প, জলবায়ু প্রকল্প এবং রুরাল এক্সেস রোড ইমপ্রোভম্যান্ট প্রজেক্ট ইন সিলেট ডিভিশন।
রাজস্ব খাতে উল্লেখযোগ্য ব্যয় দেখানো হয়েছে রাস্তা, ড্রেন ও অবকাঠামো উন্নয়ন ২ কোটি ১০ লাখ টাকা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ৩ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৭৪৮ টাকা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ড্রেন-খাল পরিস্কার ১ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। পৌর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ৬০ লাখ টাকা ইত্যাদি।
পৌরসভার রাজস্ব আয়ের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো পৌরকর ৪ কোটি ৫৪ লাখ ১২ হাজার ৭৪৮ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর ২ কোটি টাকা। হাটবাজার, বাসটর্মিনাল, জলাশয় ও পাবলিক লেট্রিন ইজারা ১ কোটি ৮৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। টমটম পার্কিং ফি ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ইত্যাদি।
গত ২ বছরে পৌরসভার উন্নয়নে যে কাজগুলো করা হয়েছে সেগুলো হল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বাইপাস সংলগ্ন বড় ড্রেন নির্মানের কাজ চালু, শ্মশানঘাট পানির ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ শেষ করা হয়েছে যার সম্ভাব্য উদ্বোধন আগামী জুলাই মাসে, মেইন রোডের ড্রেন নির্মান কাজ চালু, পুরাতন পৌরসভার নিজস্ব ভূমিতে মার্কেট নির্মাণ কাজ চালু, চন্দ্রনাথ পুকুরে মার্কেট নির্মাণ কাজ শুরু, শ্মশানঘাটের সামনে নতুন হকার্স মার্কেট নির্মান সম্পন্ন, মহিলা কলেজ রোড ও বদিউজ্জামান খান সড়কে ড্রেনের উপর স্ল্যাব নির্মান, চৌধুরী বাজার খোয়াই মুখ এলাকায় অবৈধ টমটম পার্কিং উচ্ছেদ, যানজট নিরসনে কোর্ট স্টেশন এলাকায় স্ট্যান্ড নির্মাণ এবং চৌধুরীবাজার খোয়াই নদীর পাড়ে আরেকটি স্ট্যান্ড নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন, গোসাইপুরের দীর্ঘদিনের অচল ড্রেন সচল করা, পাড়া মহল্লার আবর্জনা অপসারণের জন্য ব্যাটারী চালিত ইজি পিকআপ ক্রয়, ২০ বছরের ময়লা অপসারণ করে নতুন ডাম্পিং ষ্টেশনে স্থানান্তর ইত্যাদি।
হবিগঞ্জ পৌরসভা আগামী অর্থবছরে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহন করবে সেগুলো হলো পৌর নাগরিকদের সার্বক্ষনিক নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পৌরসভা হেল্প লাইন চালু, পৌরসভার সকল প্রকার নাগরিক সেবা ডিজিটালাইজড করা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সবুজ পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে ব্যাপক বৃক্ষ রোপন, পরিবেশ সুরক্ষার স্বার্থে ছাদবাগানকে উৎসাহিত করতে পৌরকর রিবেট সিষ্টেম চালু করা, পরিবেশ সুরক্ষায় শহরের সবগুলো পুকুরের পাড় সংস্কার ও সংরক্ষণ করা এবং কয়েকটি পুকুরে লাইটিং করা হবে যাতে করে পৌরবাসী রাতের নান্দনিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন, নান্দনিক পৌরসভা গড়ার লক্ষ্যে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সৌন্দর্য্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ করে আরো ২টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নির্মাণ, রক্তের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পৌর ব্লাড ডোনেশন ডাটাবেইজ করা ইত্যাদি। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে পর্দায় কার্যক্রম উপস্থাপন করেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাবেদ ইকবাল চৌধুরী।
কাউন্সিলরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ জাহির উদ্দিন, গৌতম কুমার রায়, টিপু আহমেদ, শাহ সালাউদ্দিন আহাম্মদ টিটু ও সফিকুর রহমান সিতু। বাজেট ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকবৃন্দের প্রশ্নের উত্তর দেন মেয়র আতাউর রহমান সেলিম।
পৌরসভার সম্পদ রক্ষায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, আয়বর্ধক প্রকল্প গ্রহন, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় পৌরসভার নানা উদ্যোগ, শহরের সৌন্দর্য্য বর্ধন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি। তিনি পৌরসভার কর্মকা- এগিয়ে নিতে সাংবাদিকদের এবং সর্বস্তুরের পৌর নাগরিকগণের সহযোগিতা কামনা করেন।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *