স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী মার্চে শেষ হতে যাচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের পাঁচ বছর মেয়াদ। এ মাসেই নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইতোমধ্যে নির্বাচন উপযোগী ইউনিয়ন পরিষদের তালিকাও চাওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকের নিকট।
এমন খবরে হবিগঞ্জ জেলাজুড়ে নড়েচড়ে বসেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইচ্ছুক প্রার্থীরা। নিরবে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন অনেকে। শোনা যাচ্ছে এবার স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার পরিকল্পনা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় দলীয় মনোনয়নের দিকেই নজর দিচ্ছেন প্রার্থীরা। তারা হাট-বাজার আর দোকান পাটে কৌশলে কথা বলে যাচ্ছেন ভোটারদের সাথে।
এদিকে, করোনাকালে অনেকে গিয়েছেন কর্মহীনদের পাশে। বিপরীতে ঘরে থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রেখেছেন অনেক প্রার্থী। আবার অস্বচ্ছলদের জন্য আসা সরকারি ত্রাণ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা এমন হিসেব গুণবেন বলেও ধারণা করছেন অভিজ্ঞ মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশে করোনা সংক্রমন শুরুর পর থেকে অনেক বর্তমান চেয়ারম্যান দিনরাত কর্মহীনদের পাশে থেকেছেন। ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন সরকারি সহায়তা। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না হয়েও অনেকে চালিয়ে গেছেন সচেতনতামূলক প্রচারণা। বিতরণ করেছেন সামর্থ অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী।
অন্যদিকে, করোনার সময়কালে জনগণের সরকারি ত্রাণ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে অসংখ্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সাময়িকভাবে বরখাস্তও হন বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান এবং সদস্য। আবার চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও ঘরে বসে থেকেছেন অনেক জনপ্রতিনিধি। ‘না পারতিমান’ ঘর থেকে বের হয়েছেন গোটা কয়েকদিন। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটাররা এসব কিছুই হিসেব করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রবীণ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা দৈনিক খোয়াইকে বলেন, অনেক জনপ্রতিনিধিই করোনাকালে নানা ধরণের অনিয়ম করেছেন। আবার দলের অনেক নিবেদিত প্রাণ জনগণের পাশে থেকেছেন নিঃস্বার্থভাবে। এমন বিষয়গুলো বিবেচনা করেই আগামীতে প্রার্থী নির্বাচন করা প্রয়োজন।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার তুহেল মিয়া দৈনিক খোয়াইকে বলেন, শুনেছি করোনার সময় অনেক সরকারি সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। খাবার পাওয়া তো দূরের কথা; একজন জনপ্রতিনিধি আমাকে এসে কেমন আছি তাও জিজ্ঞেস করেননি। কিন্তু নির্বাচনের সময় আসছে শুনেই অনেকে ভোট চাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। এমন বক্তব্য দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।
বানিয়াচং উপজেলার জাতুকর্ণপাড়া এলাকার আফছার আহমেদও জানিয়েছেন একই কথা। তিনিসহ তার কয়েকজন অস্বচ্ছল আত্মীয়-স্বজন কোন সহায়তাই পাননি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা নিজেদের লোক দেখেই সরকারি সহায়তা বিতরণ করেছেন বলেও অভিযোগ জানান আফছার।
হবিগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ নূরুল ইসলাম দৈনিক খোয়াইকে জানিয়েছেন, হবিগঞ্জ জেলায় ৭৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্প্রতি জেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোর তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যেই তথ্য প্রেরণ করা হবে।