স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ জেলা শহরে এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন একেবারেই অচল। এমনকি ভিক্ষুকককে দিতে চাইলেও দুই টাকার কয়েন নিতে চান না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই কয়েন অচল না হলেও জেলার বিভিন্ন ব্যাংকও তা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ আছে। এ নিয়ে রীতিমতো বিপাকে পড়েছেন অনেকেই।
এদিকে ব্যবসায়ীরাও কেনাবেচায় দুই টাকার কয়েন নিতে অনীহা দেখানোয় বিপাকে সাধারণ মানুষ। রিকশা, ভ্যান বা মুদি দোকানদারেরাও কেনাকাটায় দুই টাকার কয়েন নিতে অনাগ্রহী। হাটবাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক বা দুই টাকার কয়েন দেখলে প্রায়ই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না।
জানা যায়, লেনদেন বা কেনাকাটায় কাগজের নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত যেকোনও মূল্যমানের কয়েন যে-কেউ নিতে বাধ্য। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই এক দুই টাকার কয়েনে লেনদেন না করায় ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে আছে হাজার টাকার কয়েন।
হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার, চাষী বাজার, শায়েস্তানগর বাজার, সিনেমাহল বাজার সহ একাধিক বাজারের একাধিক মুদি ব্যবসায়ী জানান, এক ও দুই টাকার কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন তাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কয়েন নিতে বাধ্য হওয়া সম্পর্কে তারা জানান, অসংখ্য পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে হলে খুচরা টাকার প্রয়োজন; কিন্তু জেলা শহরে এক ও দুই টাকার কয়েন বেশিরভাগ ক্রেতাই নিতে চান না। অথচ জেলার অন্যান্য উপজেলায় কয়েনে লেনদেন করতে সমস্যা হচ্ছে না।
শহরের একাধিক চা বিক্রেতা জানান, এক কাপ রং-চা ছয় থেকে সাত টাকা ও দুধ চা আট থেকে দশ টাকায় বিক্রি হয়। তাই চা পান শেষে সিংহভাগ ক্রেতা মূল্য হিসেবে কয়েন দেন। এ সময় দুই টাকার কয়েন অনেকে দিলেও তা নেওয়া হয় না। কারণ এই কয়েন বাজারে চলে না। এ ছাড়া পাইকারি ব্যবসায়ীরাও, এক বা দুই টাকার কয়েন নিতে চান না।
এ ব্যাপারে কাপড় ব্যবসায়ী রুমন হাসান জানান, ‘স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা শহরে এক দুই টাকার কয়েন চালুর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বা বাড়িতে প্রচুর পরিমাণ কয়েন পড়ে আছে অলস টাকা হিসেবে। এতে অর্থনীতির গতিশীলতা নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, শহরে এক দুই টাকার কয়েন না চলার কোন কারণ নেই। কেউ এই কয়েন নিতে না চাইলে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।