হালনাগাদ তথ্য নেই জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে!

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তথ্য প্রযুক্তি খাতের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অবকাঠামো উন্নয়ন, দক্ষ মানব সম্পদ গঠন এবং ই-সার্ভিস প্রতিষ্ঠার প্রয়োগ নিশ্চিতকরণে সরকারের প্রচারণার ঘাটতি নেই। সেই সঙ্গে দেওয়া হয়েছে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসনে প্রযুক্তি শাখা গঠন করে একজন কর্মকর্তাকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হলেও হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে নেই বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের হালনাগাদ তথ্য কিংবা সরকার কর্তৃক উন্নয়ন প্রকল্প ও কাবিখা প্রকল্পের হালনাগাদ কোনো তথ্য।
এর ফলে ডিজিটাল তথ্য সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি যেমন দুরূহ হয়ে পড়েছে, তেমনি ব্যাহত হচ্ছে ডিজিটাল সেবা কার্যক্রম। অথচ সরকারি ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্য থাকা বাধ্যতামূলক।
গতকাল ১৩ আগস্ট জেলা প্রশাসকের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, জেলা পরিচিতি বিভাগে সংসদ সদস্য হিসাবে মোহাম্মদ আব্দুল মুনীম চৌধুরী ও আমাতুল কিবরিয়া কেয়া এর নাম দেয়া আছে। অথচ তারা দুজনেই সাবেক সংসদ সদস্য। নদ-নদী বিভাগে জেলার কোন নদীর নাম বা তথ্য দেয়া হয়নি। জেলা ব্র্যান্ডিং বিভাগে নেই কোন ধরনের তথ্য। জেলা প্রশাসকের মাসিক কর্মসূচিতে প্রায় আড়াই বছর আগের সাবেক জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের কর্মসূচির তালিকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হিসাবে জেলা প্রশাসনের সেবার তালিকা বিভাগে দেয়া হয়নি কোন ধরনের তথ্য।
সরকারি অফিসসমূহের তালিকায় পুলিশ সুপারের কার্যালয় বিভাগে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হিসাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা এর নাম থাকলেও তিনি বর্তমানে হবিগঞ্জে কর্মরত নন।
ওয়েবসাইটে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর দায়িত্বশীল কোন কর্মকর্তা সম্পর্কে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাইটে কর্মকর্তাবৃন্দের তালিকায় জেলা প্রশাসক হিসাবে সাবেক জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান এর নাম দেয়া।
২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ আমিনুল হক সরকার হলেও ওয়েবসাইটে তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা হিসাবে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ নাাছির উদ্দিন ভূঞাঁ এর নাম দেয়া।
স্থানীয় সরকার বিভাগে জেলা পরিষদ হবিগঞ্জ এ প্রবেশ করলে সেখানে দেখানো হয় ভূল তথ্য। হবিগঞ্জ পৌরসভা বিভাগে প্রবেশ করতে গেলে সেখানে কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য সেবা খাতে চিকিৎসকদের তালিকায় যাদের নাম দেয়া, তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্য দেয়া হয়নি। এমনকি এমন চিকিৎসকের নামও দেয়া আছে যিনি বর্তমানে হবিগঞ্জে কর্মরত নন।
জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সাইটে যোগাযোগ করার জন্য একটি বিভাগ আছে। কাউকে যোগাযোগ করতে হলে সেখানে প্রবেশ করতে হবে। কিন্তু গতকাল একাধিকবার চেষ্টা করেও ওই বিভাগে প্রবেশ করা যায়নি।
এছাড়াও জেলা প্রশাসনের প্রকল্প বিভাগে গিয়ে দেখা যায় গত চার বছরের কোন প্রকল্পের তথ্য বা বিবরণ দেয়া হয়নি। নামমাত্র কিছু তথ্য সন্নিবেশিত থাকলেও তা অনেক পুরোনো। ফলে ওয়েবসাইটে তথ্য লুকোচুরির কারণে সরকারে উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিষয়টি এক ধরনের অনিয়ম বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে জেলার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার আব্দুর রহিম খোয়াইকে জানান, জেলার সবগুলো সরকারি দপ্তর বা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট আছে। আর এসব ওয়েবসাইটের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের একজন করে কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের নিকট ইউজার আইডিসহ পাসওয়ার্ড দেওয়া আছে। এছাড়া এসব ওয়েবসাইট তদারকির জন্য জেলার ৯টি উপজেলায় ৬ জন সহকারী প্রোগ্রামারও রয়েছেন। ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করার জন্য তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। হালনাগাদ তথ্য না থাকা ওয়েবসাইটগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *