সাইফ আহছান ॥ ভারতের রপ্তানি বন্ধের খবরে অস্থির হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জের পেঁয়াজের বাজারও। জেলা শহরের পাইকারি বাজারে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে পেঁয়াজ বিক্রি কার্যত বন্ধ হয়ে যায় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। চৌধুরী বাজারের দোকানগুলোতে বেলা ৩টার দিকে যে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫৬ টাকা ছিল, সন্ধ্যা ৭টায় তা উঠে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। আর একই বাজারের পাইকারী বিক্রেতাদের দোকানে ৪২ টাকা কেজির ভারতীয় পেঁয়াজ রাত আটটায় হয়ে যায় ৫৬ টাকা।
অথচ দুই সপ্তাহ আগেও হবিগঞ্জের পেঁয়াজের বাজার শান্ত ছিল। প্রতি কেজির দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে। ভারতের বাজারে বাড়তেই হবিগঞ্জেও মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকায় উঠে। এরপর দাম কিছুটা কমেছিল, তা আবার বেড়ে গেল।
হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন বাজারে সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে পেঁয়াজ কিনতে মানুষের হিড়িক পড়ে গেছে। ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। জেলার বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে একই চিত্রের কথা জানিয়েছেন দৈনিক খোয়াই’র প্রতিনিধিরা।
চৌধুরী বাজারে আসা আবিদুল ইসলাম দৈনিক খোয়াইকে বলেন, তিনদিন আগেও ৫০ টাকায় কিনেছিলাম দেশি পেঁয়াজ, আর ভারতীয় পেয়াজ ছিল ৪৫ টাকা কেজি। একদিনেই তা হয়ে গেল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে, এ কারণে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শহরের শ্যামলী এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি দোকানী দৈনিক খোয়াইকে বলেন, তার দোকানে অতিরিক্ত পেঁয়াজ মজুদ ছিল না। ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে খবর ছড়ালে মুহুর্তেই তার দোকানের সকল পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে যায়। এখন ফেরত যাচ্ছেন ক্রেতারা। যে হারে দাম বেড়েছে, পাইকারী বাজার থেকে পেঁয়াজ ক্রয়ের সাহসই পাচ্ছেন না তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় চৌধুরীবাজার এলাকায় সিদ্দিক স্টোরের সত্ত্বাধিকারী জানিয়েছেন, তাদের এখানে কোন পেঁয়াজই নেই। অথচ তারা বাজারে অন্যতম ব্যবসায়ীদের একজন। একই এলাকার আকিব এন্টারপ্রাইজে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা কেজি।
অন্যদিকে শরীফ স্টোরে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, তারা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৬৫ টাকায়। পাশের দোকান নাজমুল স্টোরে ছিল ৭০ টাকা। ভারত থেকে আমদানী বন্ধ হওয়া, সামান্য পেঁয়াজ দোকানে রয়েছে, তাই তারা বেশি দামে বিক্রয় করছেন বলে জানালেন নাজমুল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী।