মাধবপুরে যেভাবে ধরা পড়লেন ধর্ষণে অভিযুক্ত অর্জুন লস্কর

প্রথম পাতা

বদরুল আলম ॥ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গোয়েন্দা পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণ মামলার আরেক আসামি অর্জুন লস্কর (২৫)। তাঁকে গতকাল রবিবার মাধবপুর উপজেলা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর গ্রেফতারের বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, পুরো অভিযানটি ছিল সিলেট গোয়েন্দা পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে ধর্ষণের ঘটনার পর এমসি কলেজ ছাত্রাবাস থেকে পালিয়ে জকিগঞ্জে নিজের বাড়িতে যান অর্জুন। পরের দিন বিকেলে জকিগঞ্জ থেকে মাধবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করেন। সেখান থেকে তিনি জকিগঞ্জের বাড়িতে এক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। ভাইয়ের সঙ্গে একাধিকবার তাঁর যোগাযোগ করার তথ্য পায় গোয়েন্দা পুলিশ। সকালে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মাধবপুরের মনতলা এলাকায় পৌঁছায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অর্জুনের অবস্থান শনাক্ত করে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মনতলা গ্রামে অর্জুনের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
মাধবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম দস্তগীর আহমেদ দৈনিক খোয়াইকে বলেন, অর্জুনকে গ্রেফতারের বিষয়টি মাধবপুর থানাকে গোয়েন্দা বিভাগ থেকে শুধু অবহিত করা হয়েছে। পুরো অভিযানটি পরিচালনা করেছে গোয়েন্দারা। অর্জুনকে গ্রেফতারের পর সেখান থেকে সরাসরি সিলেটে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিকেলে সিলেট জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্তব্যরত একজন কর্মকর্তা দৈনিক খোয়াইকে বলেন, অর্জুন লস্করকে সিলেট এনে সিলেট মহানগর পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমানকে (২৮) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত হয়ে ভারতে পালানোর সময় রবিবার ভোর ছয়টার দিকে গ্রেফতার করা হয়। হবিগঞ্জের সাবেক সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ আলী শামীম দৈনিক খোয়াইকে জানান, ভোর ছয়টার দিকে সাইফুরকে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। এরপর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে সাইফুরকে গ্রেঘতার দেখানো হয়। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ছাতক থানা থেকে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় সিলেট এমসি কলেজে বেড়াতে গিয়েছিলেন স্বামী স্ত্রী। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে স্বামী গিয়েছিলেন সিগারেট কিনতে। ফিরে এসে দেখেন, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করছেন কয়েকজন তরুণ। স্বামী প্রতিবাদ করলে মারধর করে তাঁদের দুজনকে গাড়িসহ জোর করে তুলে নিয়ে যান ওই তরুণেরা। এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে একেবারে শেষ প্রান্তে নেওয়ার পর স্বামীকে একটা স্থানে আটকে রাখেন তাঁরা। তরুণীকে ছাত্রাবাসের ৭ নম্বর ব্লকের একটি কক্ষের সামনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে দুর্বৃত্তরা এলাকা ত্যাগ করেন। তরুণীর স্বামীর বরাত দিয়ে পুলিশ সাংবাদিকদের এ ঘটনা জানায়। ভুক্তভোগী তরুণী বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি আছে।

শেয়ার করুন

1 thought on “মাধবপুরে যেভাবে ধরা পড়লেন ধর্ষণে অভিযুক্ত অর্জুন লস্কর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *