মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ সময়ে ঘনিয়ে আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের। তবে আরও প্রায় পাঁচ মাস বাকী থাকলেও এরই মাঝে নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে প্রার্থীরা মাঠে নেমে পড়েছেন। নির্বাচনী হালচাল নিয়ে দৈনিক খোয়াই’র ধারাবাহিক প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে আজ তুলে ধরা হল নবীগঞ্জ উপজেলার ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নের নির্বাচনী হালচাল ঃ
ইউনিয়ন পরিষদের পরিচিতি ঃ
নবীগঞ্জ উপজেলায় ভাটি অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়ন। ইউনিয়ন পরিষদ স্থাপনের সময় স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর বড় ভাকৈর নামে ১টি ইউনিয়ন গঠন করে। পরে ১৯৭৪ সালে তা বিভক্ত হয়ে ২টি ইউনিয়নে রূপ লাভ করে। একটি হচ্ছে বড় ভাকৈর (পশ্চিম), আর অন্যটি বড় ভাকৈর (পূর্ব)।
১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন চৌকি গ্রামের ধীরেন্দ্র চন্দ্র দাশ। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন অধীর চন্দ্র মহালদার। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত মতিলাল দাশ। পরে ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৮ ও ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৩ এবং ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ৩ বার বিজয়ী হয়ে এক টানা ১৬ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আশুতোষ দাশ। ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সত্যজিত দাশ। এরপর ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সমর চন্দ্র দাশ। সবশেষ ২০১৬ সালে গেল নির্বাচনে ফের বিজয়ী হন সত্যজিত দাশ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সত্যজিৎ দাশ (চশমা) প্রতীকে (৩৩৭৩) ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সমর চন্দ্র দাশ (নৌকা) পেয়েছিলেন (২২৪১) ভোট।
১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নটি হাওর বেষ্টিত এলাকা। ইতিপূর্বে ওই ইউনিয়নে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তবে বর্তমান সরকারের আমলে অনেকটা উন্নতি হয়েছে। ইউনিয়নে প্রায় ১৪ হাজারের মত ভোটার রয়েছেন। তবে এখানকার প্রধান সমস্যা হচ্ছে মাদক। সকল গ্রামেই রয়েছে মাদকের ছড়াছড়ি।
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এবার নির্বাচনী প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন, নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ, বর্তমান চেয়ারম্যান সত্যজিৎ দাশ, ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি শাহিদ তালুকদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গৌতম কুমার দাশ, বিগত নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত প্রার্থী স্মৃতিভূষন দাশ, তরুন সমাজ সেবক সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমান ফ্রান্স প্রবাসী আলিমুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির নেতা ভুলা দাশ, প্রবাসী রঙ্গলাল দাশ। তারা বিভিন্নভাবে নিজেদের প্রার্থীতার কথা জানান দিচ্ছেন। সাবেক চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ দৈনিক খোয়াইকে বলেন, আগামীতেও তিনি নৌকার মনোনয়ন পেতে আশাবাদী। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার সকল সমস্যা সমাধানে নিরলসভাবে কাজ করবেন। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহিদ তালুকদার বলেন, ইউনিয়নে অনেক সমস্যা রয়েছে। দলীয়ভাবে যদি নির্বাচনে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে তিনি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি নির্বাচিত হলে ইউনিয়নকে সম্পূর্ন দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করবেন।
আলিমুল ইসলাম বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহন করার জন্য কিছু দিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন। অবহেলিত এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে চান তিনি।
স্থানীয়রা দৈনিক খোয়াইকে জানান, অনেকেই নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে জানান দিয়ে বিভিন্নভাবে প্রচারনা চালাচ্ছেন। তবে মাদকমুক্ত ইউনিয়ন গড়তে পারবেন এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান তারা।