জুয়েল চৌধুরী ॥ জিতু মিয়া প্রায় ১২ বছর আগে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে তার পিতা ডোম ছাবু মিয়ার সাথে লাশ কাটা শুরু করেন। এ পর্যন্ত তিনি ২ হাজারের বেশি লাশ কেটেছেন। গত ১ বছর আগে তার পিতা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর পর থেকে পিতার হাল ধরেন জিতু মিয়া নিজেই। অনেক সময় মর্গে লাশ এলে, খবর পাওয়া মাত্রই মাকে নিয়ে তিনি ছুটে যান। যাতে মানুষ লাশ নিয়ে ভোগান্তিতে না পড়ে। তার পিতা মারা গেছে ১ বছর। কিন্তু আজো জিতুর চাকরি সরকারি হয়নি। জিতুর আর কোনো উপার্জন নেই। মাকে নিয়ে পুরাতন হাসপাতালের পরিত্যক্ত কক্ষে কোনো রকমে বসবাস করছেন। যেদিন লাশ আসে সেদিন তার বাড়ির চুলায় আগুন জ্বলে। লাশ নেই তার আয়ও নেই। ফলে অনাহারে অর্ধাহারে তার পরিবার নিয়ে জীবন যাপন করতে হয়। তার কোনো চাহিদা নেই। লাশ কাটার পর যে যত দেয় তাতেই তিনি খুশি। জিতু ছাড়া লাশ কাটার আর কোনো লোক নেই। তিনি ছাড়া হবিগঞ্জ জেলায় লাশ কাটার আর কেউ নেই। অথচ তার পেশাটি স্থায়ী হয়নি।
গত শনিবার সরেজমিনে গেলে জিতু আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের বলেন, মর্গে চারটি লাশ এসেছে। কিন্তু কাটার কোনো লোক নেই। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে লাশ কাটাছেড়া করছি। কিন্তু আমার পিতা মারা যাওয়ার পর আমার মাকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাপন করছি। আমার চাকরি স্থায়ী হচ্ছে না। কবে যে হবে এটার কোনো হদিস নেই। তাই প্রশাসনের নিকট দাবি চাকরিটা যেনো স্থায়ী হয়।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মৃত ছাবু মিয়ার ছেলে জিতু বর্তমানে অস্থায়ীভাবে ডোমের কাজ করছেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়োগের মাধ্যমে নিয়ম অনুযায়ী লোক নিয়োগ দেয়া হবে।