জায়গা লিখে না দেওয়ায় একঘরে তিন পরিবার

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলায় নিজের জায়গা অন্যের নামে লিখে না দেওয়ায় তিনটি পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে সমাজপতিরা।
উপজেলার বড়ইউড়ি ইউনিয়নের মদনমুরত গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ নিশ্চিত করেছেন।
এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও উপজেলা প্রশাসনে অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি; কেউ কেউ সহমর্মিতা প্রকাশ করলেও এ সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, মদনমুরত গ্রামের রুস্তম আলী, মোঃ সামছুল ইসলাম ও মোঃ রাজন মিয়ার পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না।
গত ৭ জুন একঘরে করার বিষয়ে গ্রামের শফি উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, আব্দুল লতিফ, আব্দুর রকিব, নূর উদ্দিন, আনছার উদ্দিন, জাহির উদ্দিন, নাছির উদ্দিন ও ফারুক মিয়ার নামে ভুক্তভোগীরা বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, গ্রামের শফি উদ্দিন কয়েক বছর আগে মুজিবুল ইসলামের কাছে জমি বিক্রি করেন; যা পরবর্তীতে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার কথা। কিন্তু রেজিস্ট্রি করে দিতে বললে এর বিনিময়ে তিনি ওই পরিবারের নিকট রাস্তার জন্য আরও জায়গা দাবি করেন।
সম্প্রতি অতিরিক্ত জায়গা না দেওয়ায় একটি চক্র জোরপূর্বক ওই রাস্তার জায়গাটির দখল শফি উদ্দিনকে বুঝিয়ে দিতে চান। তা করতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে সালিশের নাম করে সমাজপতিদের জড়ো করে তিনটি পরিবারকে একঘরে করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এরপর থেকে ওই তিনটি পরিবারকে সমাজের কারো সঙ্গে মিশতে দেওয়া হচ্ছে না। রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না দেওয়ায় তারা হাট বাজারে যেতে পারছেন না, বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরাও। গবাদী পশুও বাড়ি থেকে বের করতে দেওয়া হচ্ছে না।
একঘরে হওয়া পরিবারের রুস্তম আলী বলেন, আমাদের নারী ও শিশুরা রাস্তায় বের হলে তাদের নানাভাবে হয়রাণী করা হচ্ছে। এ অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “ওই তিনটি পরিবারের সঙ্গে কাউকে যোগাযোগ করতে দেখলে সমাজপতিরা হুমকি দিচ্ছেন। এজন্য আমরা কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। স্থানীয় কিছু সচেতন ব্যক্তি এমনটি করা অন্যায় বললেও; সরাসরি কোন কথা বলছেন না প্রভাবশালীদের ভয়ে।
এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ খোয়াইকে বলেন, “একঘরে করে দেওয়ার ঘটনাটি আমি শুনেছি। এটি অন্যায়। অভিযোগ পেয়ে এ ঘটনা মিমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে আমার এখানে আসার জন্য লিখিত নোটিশ দিয়েছি।”

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *