স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে চলাচলকারী মোট যানবাহনের ৯০ শতাংশ এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলোর ৯৯ শতাংশই অবৈধ বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। তাঁদের ভাষ্যে জেলায় বিভিন্ন ধরনের ৩০ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও বর্তমানে এগুলোর ২৭ হাজার অর্থাৎ ৯০ শতাংশেরই রেজিস্ট্রেশন মেয়াদোত্তীর্ণ। অন্যদিকে, মোট সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৯৯ শতাংশই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রবিহীন। এসব যানবাহন সরকারের বিবেচনায় অবৈধ।
গতকাল হবিগঞ্জ শহরে চলাচলকারী অবৈধ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধ, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং ফুটপাত দখলমুক্তের বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। খোয়াই মুখ নুরুল হেরা জামে মসজিদ সংলগ্ন পৌরঘাটলা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত ওই সভা যৌথভাবে আয়োজন করে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা।
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান করলে বিভিন্ন মহল ক্ষুব্ধ হয় জানিয়ে সভায় হবিগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ উল্লা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে ট্রাফিক পুলিশকে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্র্যাট প্রিয়াংকা পাল প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
সভায় জানানো হয়, শহরে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে অনিবন্ধিত সিএনজি অটোরিকশা ও ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া খোয়াই নদীর দুই পাড়ে যে সকল অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে সেগুলোর বিরুদ্ধে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া কামড়াপুর ও খোয়াই ব্রিজের যে কোন একটি দিয়ে শহরে গাড়ি প্রবেশ করবে এবং অন্যটি দিয়ে গাড়ি বের হলে যানজট কমবে এবং অবৈধ যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে পারবে না বলে সভায় আলোচনা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন,‘যানজট মুক্ত শহর গড়তে হলে অবৈধ টমটম শহরে প্রবেশ করা বন্ধ করতে হবে। ব্রীজের মুখে অবৈধ স্থাপনা, জটলা ইত্যাদি দুর করতে হবে। রাস্তার পাশে দোকানপাট বা নির্মাণ সমাগ্রী রাখা যাবেনা।’ মেয়র বলেন,‘ যেহেতু কিবরিয়া ব্রীজ মেরামতের জন্য ভাঙ্গা হয়েছে সেহেতু এই সময়ে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সাহায্যের জন্য অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।’
এর আগে চার সদস্যের কমিটি খোয়াই ব্রীজ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ উল্লা এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা পাল।
সভায় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ নাহিজ, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ সিরাজ উদ্দিন, মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ সামছু মিয়া প্রমুখ।