স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও নির্বাচিত ১৪ জন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান-মেয়র ও ১৮ জন ভাইস চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং সচিবদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গতকাল সোমবার স্থানীয় সরকার বিভাগের চার প্রজ্ঞাপনে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
এদিকে, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলেয়া আক্তার তাঁর পদ থেকে আগেই পদত্যাগ করেছিলেন; ফলে সরকারের গতকালের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এখন থেকে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রজ্ঞাপনে জেলা পরিষদ সদস্য ও পৌর কাউন্সিলরদের ব্যাপারে কোনকিছু উল্লেখ হয়নি; তাঁদের ব্যাপারে কি নির্দেশনা রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনও তা বলতে পারছে না।
এমন পরিস্থিতিতে হবিগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য ও পৌরসভার কাউন্সিলরেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
হবিগঞ্জে অপসারণ হওয়া ৩২ জনপ্রতিনিধির মধ্যে ৫ জন পৌর মেয়র, ৯ জন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ১৮ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এখন তাঁদের স্থলে পৌরসভায় সচিব ও নয় উপজেলা পরিষদে ইউএনওরা দায়িত্ব পালন করবেন।
বাদ পড়া মেয়ররা হলেনÑ হবিগঞ্জ পৌরসভায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, মাধবপুরে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান মানিক, চুনারুঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাইফুল আলম রুবেল, নবীগঞ্জে বিএনপি নেতা ছাবির আহমেদ চৌধুরী ও শায়েস্তাগঞ্জে বিএনপি নেতা ফরিদ আহমেদ অলি।
অপসারণ হওয়া নয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মধ্যে পাঁচজন আওয়ামী লীগ সমর্থিত এবং ৩ জন বিএনপি দলীয় ও বাকী একজন স্বতন্ত্র।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, চুনারুঘাটে বিএনপি নেতা সৈয়দ লিয়াকত হাসান, মাধবপুরে বিএনপি নেতা সৈয়দ মোঃ ফয়সল, নবীগঞ্জে বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান চৌধুরী সেফু, বাহুবলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত আনোয়ার হোসাইন সালেহী, বানিয়াচংয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন খান এবং আজমিরীগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা আলা উদ্দিন।
ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানরা হলেন, হবিগঞ্জ সদরে মাহবুবুর রহমান আউয়াল, শরিফা আক্তার কুমকুম; লাখাইয়ে আরিফ মিয়া, প্রিয়া বেগম; শায়েস্তাগঞ্জে আ স ম আফজাল আলী, মোছাঃ মমতাজ বেগম ডলি; চুনারুঘাটে মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম তরফাদার, খাইরুন আক্তার; মাধবপুরে মোঃ এরশাদ আলী, আছমা চৌধুরী; বাহুবলে হাফেজ কামরুল ইসলাম, মোছাঃ নাজমুন নাহার রিতা; নবীগঞ্জে মোঃ সাইফুল জাহান চৌধুরী, শেখ ছইফা রহমান কাকলী; বানিয়াচংয়ে আশরাফ হোসেন খান, জাহেনারা আক্তার বিউটি এবং আজমিরীগঞ্জে মিলোয়ার হোসেন ও রেফা আক্তার।
অন্যদিকে, স্থানীয় সরকারের এ জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ করে প্রজ্ঞাপনে জেলা পরিষদ সদস্য ও পৌর কাউন্সিলরদের ব্যাপারে কোনকিছু উল্লেখ হয়নি। সামনে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এনিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
কয়েকজন জেলা পরিষদ সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর খোয়াইকে জানান, জেলা, উপজেলা ও পৌর পরিষদ পুরোপুরিভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে কি না? এ প্রশ্নের উত্তর তারা পাচ্ছেন না। এনিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন গতকাল উপজেলা পরিষদে গিয়েছিলেন বলেও জানান।
এ জনপ্রতিনিধিদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত? প্রশ্নের জবাবে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রভাংশু সোম মহান খোয়াইকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তের আদেশ পাইনি। আমরা পরবর্তী আদেশের অপেক্ষায় রয়েছি।’