খোয়াই নদীর পানিতে লোকালয় ও ফসল প্লাবিত

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টির ফলে খোয়াই নদীতে পানি বাড়ছে। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুর ও জালালাবাদসহ ৫টি স্থানে বাঁধ ভেঙে নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকছে।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার ভোর থেকে ৫টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকায় কয়েকশ’ হেক্টর সব্জি জমি প্লাবিত হয়েছে। জেলা শহরের নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বাসাবাড়িও প্লাবিত হয়।
শহরতলীর পশ্চিম ভাদৈ ও শায়েন্তাগঞ্জ উপজেলার আলাপুর ও লেঞ্জাপাড়া এলাকায় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে থাকলে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরবাসীকে সাবধানে থাকার জন্য প্রচারনা চালাচ্ছে।
অন্যদিকে টানা বর্ষনে হবিগঞ্জ শহরের বেশ কিছু এলাকা ডুবে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, সার্কিট হাউজসহ শহরের অনন্তপুর, মোহনপুর এবং শায়েস্তানগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় লোকজন জলাবদ্ধ হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয়রা জানানÑ হবিগঞ্জ পৌরসভার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার না করায় সেগুলো ময়লায় ভরে গেছে। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই ময়লাযুক্ত পানি বাসায় প্রবেশ করছে।
আগেরদিন রাতে বৃষ্টি হওয়ায় গতকাল খ্রিস্টান মিশন এলাকার এনি মনি দাসের বাসা প্লাবিত হয়। গতকাল ছেলেমেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাকে হোটেলে উঠতে হয়েছে। বাসার মালপত্র ভ্যান দ্বারা স্থানান্তর করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এভাবে কতদিন চলবে? বার বার জনপ্রতিনিধিকে জানানোর পরও কোন সমাধান হয়নি।’
হবিগঞ্জ শহরে কলেজ কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা কয়েকজন জানান, প্রভাবশালীরা ড্রেন বন্ধ করে বাসাবাড়ি নির্মাণ করেছেন। ফলে একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা হয়। নোংরা পানির মাধ্যমে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
জালালাবাদ এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোয়াই নদীর বাঁধে ওই এলাকায় শুরুতে ছোট ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনটি এখন প্রায় দেড়শ’ ফুট আকার ধারণ করেছে। শুরুতে ভাঙন মেরামত করা সহজ ছিল।
গতকাল রাতে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ খোয়াইকে জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২০১ সেন্টিমিটার, মাছুলিয়া পয়েন্টে ১৯৫ সেন্টিমিটার ও শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ১২৭ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।
তিনি আরও জানান, খোয়াই নদীর বাঁধ মেরামতের জন্য ২ হাজার জিও এবং ৬ হাজার সিনথেটিক বস্তা মজুদ করা হয়েছে। আরও বস্তা ক্রয় করা হচ্ছে।
খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপার সাধারন সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, খোয়াই নদীর বাঁধগুলো খুবই অরক্ষিত। অপরিকল্পিত বালু মাটি উত্তোলন এবং বালু পরিবহনে নদী তীরে ভারি ট্রাক্টর ব্যবহার করার কারণে নদী এবং নদীর তীর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *