গ্রীষ্মকালীন শিমের সাথে বরবটি-চিচিঙ্গা চাষে সফলতা

শেষ পাতা

মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ মোঃ সমুজ আলী ও মোঃ সনজব আলী দুই ভাই। বাহুবলের ভুলকোট গ্রামে প্রায় ৩৬ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ করেছেন তাঁরা। শিমের ফলন ভালো হয়েছে। একই জমিতে বরবটি ও চিচিঙ্গাও চাষ হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুই ভাই মিলে শিম ক্ষেতে কঠোর পরিশ্রম করছেন। গাছ থেকে শিম সংগ্রহ করে প্রস্তুত করছেন বিক্রির জন্য। শুধু এই দুই সহোদরই নন; এলাকার অন্যান্য কৃষকও এ জাতের শিম চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
মোঃ সমুজ আলী ও মোঃ সনজব আলী জানান, আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তাঁরা ক্রিপার প্রদর্শনীতে শিমের সাথে বরবটি ও চিচিঙ্গা চাষ করেন। গাছ থেকে শিম সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য বাজারে নেন। পাইকারের কাছে প্রতিকেজি শিম ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করেন। গ্রীষ্মকালীন সিকৃবি-১ জাতের শিম বীজ রোপণ করেন মার্চ মাসে। এই মৌসুমের চাষে তাঁদের প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
জুন মাসের মাঝামাঝিতে গাছে গাছে শিম দেখা যায়। শিম, বরবটি ও চিচিঙ্গা বিক্রি করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা এসেছে। অক্টোবর পর্যন্ত শিম উৎপাদন অব্যাহত থাকার কথা। ওই সময় পর্যন্ত আরও দেড় থেকে ২ লাখ টাকা শিম বিক্রি থেকে আসবে বলে তাঁরা আশা করছেন। এছাড়া বরবটি ও চিচিঙ্গা থেকেও অর্থ আসছে।
দুই ভাই আরও জানান, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীমের সার্বিক পরামর্শে শিম চাষ করেন। এতে তাঁরা সফল হয়েছেন। তাঁদের শিম চাষ দেখে এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝেও আগ্রহ বেড়েছে।
স্থানীয় কৃষক মোঃ সাদেক মিয়া বলেন, গ্রীষ্মকালীন সিকৃবি-১ জাতের শিম চাষ শুরু করেন সমুজ ও সনজব আলী। শিম চাষে তাঁরা সফল হয়েছেন। পাইকাররা এ শিম প্রতিকেজি ১৮০ থেকে ১৫০ টাকা দরে কিনে নিয়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি করছেন। তাই এ মৌসুমে জমি আবাদ করে এ জাতের শিম চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। শিম বিক্রি করছি। অক্টোবর মাস পর্যন্ত শিম বিক্রি চলবে।
বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম জানান, উপজেলার নানা এলাকায় শীতকালে বিভিন্ন জাতের শিম চাষ হলেও গ্রীষ্মকালের জন্য উপযুক্ত হচ্ছে সিকৃবি-১ জাতের শিম। এই শিম গ্রীষ্ম ও বর্ষার আবহাওয়া সহিষ্ণু। মূলত এই শিম চাষে উপজেলার ভুলকোট গ্রামে সফলতা পেয়েছেন দুই ভাই সমুজ আলী ও সনজব আলী। তাঁদের দেখাদেখি কৃষক দুলাল মিয়া ও সাদেক মিয়াসহ আরও অনেক কৃষক শিম চাষে সফল হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, এখানকার উঁচু জমিতে কৃষকরা ধানসহ নানারকম সবজির আবাদ করেন। বর্তমানে আমার পরামর্শে একাধিক কৃষক সিকৃবি-১ জাতের শিমের আবাদ করেছেন। ভালো চাষের জন্য সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকি। ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে। তাঁরা দামও পাচ্ছেন ভালো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন মজুমদার বলেন, বাহুবলে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ হতো না। বর্তমানে সেখানে শিম চাষ করছেন কিছু কৃষক। ভালো ফলন হয়েছে। কৃষকরা দামও পাচ্ছেন ভালো। ভবিষ্যতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *