শহিদের রক্তের সম্মান দিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

শেষ পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ও টানা ৩ বারের নির্বাচিত হবিগঞ্জ পৌরসভার পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছ বলেছেন- জালালাবাদ এলাকায় খোয়াই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলেছিলাম। ভেবেছিলাম, মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটি তাদের হৃদয় স্পর্শ করবে। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। তাই মানুষের কষ্ট লাঘবে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি নৌকা দেয়া হয়েছে জনসাধারণের পারাপারের জন্য। এই নৌকা দিয়ে নদী পারাপারে কাউকে কোনো টাকা দিতে হবে না। যত দিন পর্যন্ত বাঁধ মেরামত না হবে, তত দিন পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার জালালাবাদ এলাকায় খোয়াই নদীর ভাঙ্গা বাঁধে জনসাধারণের চলাচলের জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে দেয়া একটি নৌকা উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন- বাঁধ সংস্কারের বিষয়টি নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জি কে গউছ বলেন, আমরা মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি, মানুষের জন্যই কথা বলি। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। ১৫১৭ দিন শেখ হাসিনার মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে মানবেতর জীবন-যাপন করেছি। ১/১১ ছিল বাংলাদেশের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই ১/১১ এর সুবিধাভোগীরা অন্যকে প্ররোচনা দিয়ে আমাদের ছোট করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু জনগন আমাকে ভালবাসা দিয়েছেন। কারাগারে থেকেও আমাকে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত করেছেন।
নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন- আমি কাজে বিশ্বাস করি। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে যাচ্ছি, মানুষের জন্য কাজ করছি। আমাদের নিয়ে যারা সমালোচনা করেন, বুঝে-শুনে করুন, মানুষ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। ছাত্র-জনতার মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, মানুষের বৈষম্য দুর করার জন্য যে অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে নেতা বানানোর জন্য এই কাজটি হয়নি। সময় আসবে, মানুষ আবারও লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে। আমরা ভালো কাজে প্রতিযোগীতা করি, সকলে মিলে দেশ গঠনে কাজ করি। তাহলেই শহীদের রক্তের প্রতি আমাদের সম্মান জানানো হবে।
গুজব রটনাকারীদের উদ্দেশ্য করে জি কে গউছ বলেন- যারা ফেইসবুকে লিখেন, সত্য লিখুন, মিথ্যা বর্জন করুন। যারা টিনসেটের বাসা থেকে অট্টালিকার মালিক হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে লিখুন। আপনাদের লিখুনীতে মানুষ জানতে চায় তাদের টাকার উৎস কি? আমি ১৯৬৮ সালে যে বাড়িতে জন্ম নিয়েছিলাম, এখনও সেই বাড়িতেই আছি। পৌরসভার মেয়র হওয়ার পূর্বে যে সম্পদের মালিক ছিলাম, সেই সম্পদের সাথে আর কোনো সম্পদ যোগ হয়নি। বরং ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নিজের ২৭ কাঠা জায়গা বিক্রি করেছি। আমার কোনো পিছু টান নেই। আমার দুটি ছেলে লেখা পড়া করে আমেরিকা ও কানাডায় অবস্থান করছেন। জনগণের টাকা চুরি করে নিজের বাড়িতে নেয়ার চেষ্টা করিনি, ভবিষ্যতেও করব না, ইনশাআল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমান কাজল, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব সফিকুর রহমান সিতু, রিচি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী শামছু মিয়া প্রমুখ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *