স্টাফ রিপোর্টার ॥ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী হবিগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে মাটি ফেলায় বৃন্দাবন সরকারি কলেজসহ দুইটি এলাকার পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রশাসনের একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণে জনস্বার্থ বিঘিœতের বিষয়টি ধরা পড়লেও তা আমলে নিতে নারাজ জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট অরূপ রতন পাল। তাঁর বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ তদন্ত করেছেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) তনুকা ভৌমিক।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আনসার-ভিডিপি কার্যালয়ের সীমানা প্রাচীরে এলাকার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গণউত্তেজনা ও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই শতাধিক পরিবার জলাবদ্ধতার শিকার হন।
আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের মালিকানাধীন জায়গার পাশে পানি নিস্কাশনের খাল ছিল; খালটি কার্যালয়ের কাটাতারের সীমানার বাইরে ছিল। খালের কিছু অংশ নতুনভাবে নির্মিত সীমানা প্রাচীরের ভিতরে ঢুকে যায়। মাটি ভরাটের ফলে ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টির মৌসুমে এলাকা জলমগ্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বিদ্যমান।
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শেখ বদরুল আলম এ সংক্রান্ত আরেক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, আনসার ভিডিপি অফিসে কাটাতারের বেড়া থেকে কিছু জায়গায় আরও ৪ থেকে ৬ ফুট বাইরে গিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী হবিগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্টের কার্যালয়ের পাশে দীর্ঘদিন পুরনো প্রায় ৭ ফুট প্রস্থ ও ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি ড্রেন ছিল। বৃন্দাবন সরকারি কলেজের জন্মলগ্ন থেকে কলেজ কোয়ার্টারসহ দুটি এলাকার পানি এ ড্রেন দিয়ে নিষ্কাশন হতে থাকে।
প্রায় দুই বছর আগে ড্রেনের উপরে প্রায় ৫ ফুট জায়গা ফাঁকা রেখে পিলারের উপরে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। এতে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি ফাঁকা থাকা জায়গার তলদেশও সীমানা প্রাচীর দিয়ে বন্ধ করে মাটি ফেলে দেয়া হয়। ফলে ড্রেনের প্রস্থ কমে প্রায় দেড়ফুটে দাঁড়িয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কলেজ কোয়ার্টার এবং নিউ কলেজ কোয়ার্টার এলাকাবাসীর ঘরে পানি প্রবেশ করে। প্লাবিত হয় বৃন্দাবন সরকারি কলেজসহ বেশ কিছু জায়গা। ফলে ভুক্তভোগী লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী হবিগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট অরূপ রতন পাল বলেন, স্থানীয়দের কথায় আমি কোনকিছু করতে পারব না। প্রশাসন যদি আমাকে বলে তাহলে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করব। এর বাইরে আমার আর কোন কিছু করার নেই। যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসনের ডেপুটি কালেক্টর রেভিনিউ নিবিড় রঞ্জন তালুকদার খোয়াইকে জানান, তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।