করোনাকালীন সময়ে প্রয়োজনীয় সেবা খাতগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবা দিয়ে আসলেও ঝুঁকি থাকায় গুরুত্বপূর্ণ পাসপোর্ট সেবা বন্ধ ছিল। ফলে অনেক লোকজনকে অপেক্ষা এবং ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। বিশেষ করে যারা আমেরিকায় পারিবারিক ভিসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে রয়েছেন তারা পড়েন বেকায়দায়। তবে শেষ মুহুর্তে অন্যান্য সেবার পাশাপাশি পাসপোর্ট অফিস চালু হওয়ায় সেবা গ্রহীতাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তবে উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠাও রয়েছে বহুলাংশে। কারণ দীর্ঘ বন্ধ থাকার পরও ৬ মাস, ৭ মাস পূর্বে যারা আবেদন দিয়েছিলেন তারা এখনও হাতে পাসপোর্ট পাননি। এমনকি নবায়ন করার আবেদন দিয়েও দীর্ঘ সময় পর পাসপোর্ট হাতে আসেনি অনেকেরই। এ ধরণের ভোগান্তির শিকার লোকজনের অভিযোগে জানা যায়, পাসপোর্ট অফিসে এখনও দালাল চক্র সক্রিয়। এই চক্রের সাথে আতাত করলে পাসপোর্ট আসে দ্রুত। আবার তাদের সাথে যোগাযোগ না করলে মাসের পর মাস আটকে থাকছে পাসপোর্ট। এরই মাঝে হবিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বদলী হয়ে নতুন সহকারী পরিচালক যোগদান করেছেন। নতুন সহকারী পরিচালক এই দালাল চক্র ভাংতে পারেন কি না আমরা তার অপেক্ষায়। সরকারের অন্যতম উদ্যোগ হলো প্রবাসে কর্মী প্রেরণ। এর উদ্দেশ্য হলো দেশের বিশাল বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের পাশাপাশি সরকারের রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধি। প্রবাসে কর্মী প্রেরণের প্রথম শর্ত হল পাসপোর্ট তৈরী। শুরুতেই বিদেশ গমনেচ্ছুরা পাসপোর্ট তৈরী করা নিয়ে ঝামেলায় পড়ে যান। এই ঝামেলা হয় তদন্ত প্রতিবেদন এবং নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে। নির্ধারিত ফি’র বাইরে দালালদের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে অনেকেই হয়ে পড়েন হতাশ। আবার গ্রামের সাধারণ লোকজন যারা পাসপোর্ট তৈরী করতে আসেন তাদের বিভিন্ন ডকুমেন্টে কিছু গড়মিল হলেই দেখা দেয় বিড়ম্বনা। বিশেষ করে এনআইডি এবং জন্ম নিবন্ধনের ভূলে পাসপোর্ট আটকে যাচ্ছে অনেকেরই। পিতা মাতার নামে ভুল থাকাও একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। এই প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে পাসপোর্ট গ্রহীতাদের সেবা আরো সহজে দেয়ার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। আর না হলে সাধারণ পাসপোর্ট থেকে এমআরপি এবং সর্বশেষ প্রযুক্তি ই-পাসপোর্ট আসলেও সত্যিকারের সুফল পাওয়া যাবে না। বিষয়টির প্রতি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ও নজর রাখা প্রয়োজন। পাশাপাশি প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদেরও এ বিষয়ে তদারকী প্রয়োজন রয়েছে বলে আমরা মনে করি।