ঠিকাদারের পরিকল্পনাহীনতায় শায়েস্তাগঞ্জে সারাদিন যানজট

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগে থেকে না জানিয়ে অপরিকল্পিত সংস্কার কাজ চালানোয় হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লস্করপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দিনভর যানজট লেগে ছিল। ফলে কয়েকশ’ যানবাহন আটকে থাকায় হাজারো যাত্রীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রীজ থেকে মিরপুর বাজার পর্যন্ত স্থানে যানজট স্থায়ী থাকে বলে হাইওয়ে পুলিশ খোয়াইকে জানায়।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, লস্করপুর এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ক্রস করা রেলপথের পাশে দুই লেনের একটি বন্ধ রেখে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা গ্রুপের শ্রমিকরা সংস্কার কাজ করছে। ফলে মহাসড়কের দুদিক থেকে আসা যানবাহন এক লেনে চলাচল করায় জানজট লেগে আছে।
রোগী নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স, যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী যানবাহনকে সেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থাকতে দেখা যায়। যানজটের কবলে পড়া যানবাহন ও চালকরা এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নতুন ব্রীজ থেকে মিরপুর পর্যন্ত দুই লেন সড়ক ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অন্য অংশের তুলনায় সরু। গতকাল এক লেন বন্ধ থাকা এবং ছোট্ট জায়গা দিয়ে যানবাহনের চলাচল যানজটের বড় কারণ।
হবিগঞ্জ থেকে রোগী নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে যাওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স লস্করপুর রেলগেট এলাকায় দীর্ঘ সময় আটকে থাকে। চালক নুরফল মিয়া জানান, দীর্ঘ সময় গাড়ি আটকে থাকায় মুমূর্ষু রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।
বাসচালক আব্দুল মতিন জানান, মহাসড়কে বড়রকম সংস্কার কাজ করলে আগে থেকে ঘোষণা দেওয়ার কথা। কিন্তু এবার লস্করপুর এলাকায় হঠাৎ এক লেন বন্ধ করে সংস্কার কাজ করায় যাত্রীসহ বাসটি দেড় ঘন্টা যানজটে আটকা ছিল।
একইভাবে এনা, শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, আল মোবারকা পরিবহন ও হবিগঞ্জ-সিলেট বিরতিহীন এক্সপ্রেসের অনেকগুলো বাসকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা ও ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত যানজট স্থায়ী থাকে। তখন ভুক্তভোগী যাত্রীরা সংস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর ইসলাম খোয়াইকে জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা গ্রুপ আগে থেকে কোনকিছু না জানিয়েই সংস্কার কাজ করে। যানজটের খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চালায়। তারপরও লোকজন যানজটের দুর্ভোগে পড়েন।
ভবিষ্যতে এমনভাবে সংস্কার কাজ করার আগে হাইওয়ে পুলিশসহ সকল দপ্তরকে অবগত করার জন্য তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বলেও জানান।
গণবিজ্ঞপ্তি জারী অথবা আগে থেকে অবগত না করে কেন মহাসড়কের এক লেন বন্ধ রাখার ব্যাপারে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল খোয়াইকে বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাঁদের অধীনে নয়; তাঁরা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রকল্পের আওতাধীন বিধায় স্থানীয় দপ্তর এ প্রসঙ্গে অবগত ছিল না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *