স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার পরও হবিগঞ্জের ৫২ জন ব্যক্তি তাঁদের অস্ত্র জমা না দিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এসব অস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।
জানা গেছে, গত ১৫ বছরে হবিগঞ্জ জেলার ৩৪৪টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে। এগুলোর ৩৬টি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ও বাকী ৩০৮টি অস্ত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নেওয়া।
কর্মরত সামরিক-অসামরিক কর্মকর্তা ব্যতিত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নেওয়া অস্ত্রগুলো গতকাল মঙ্গলবারের মধ্যে থানায় জমা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা আছে। অন্যথায় অস্ত্র আইন অনুযায়ী লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রধারীদের ব্যাপারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা।
জেলা প্রশাসনের হিসেবে হবিগঞ্জে ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য নেওয়া ৩০৮টি অস্ত্রের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ২৫৬টি জমা দেওয়া হয়েছে; এখনও আরও ৫২টি জমা দেওয়ার বাকী। এ অস্ত্রগুলো লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার পরও ব্যবহারকারীরা তাঁদের নিজের হেফাজতে রেখেছেন।
এদিকে, হবিগঞ্জে ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি অস্ত্র হাতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের। এ পরিস্থিতিতে তাঁদের হাতে অস্ত্র থাকার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত ৪ আগস্ট হবিগঞ্জ শহরে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা শাহনেওয়াজ ও ওয়াসিম খানসহ কয়েকজনের অস্ত্রসহ মারামারী করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা এখন আত্মগোপনে। তাঁদের পক্ষ থেকে থানায় কোন অস্ত্র জমা দেওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
আরও কয়েকজন লাইসেন্সধারী আওয়ামী লীগ নেতার হাতে অস্ত্র থাকলেও তাঁরা হত্যা মামলার আসামী হয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। কেউ কেউ দেশত্যাগও করেছেন। ফলে তাঁরা অস্ত্র জমা দিয়েছেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার পরও অস্ত্র জমা না দেওয়ায় আইনগতভাবে তা অবৈধ এবং হবিগঞ্জে ৫২টি অস্ত্র জমা পড়েনিÑ এসব বিষয়ে প্রশাসনের কি ব্যবস্থা নেবে? জানতে চাইলেÑ হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রভাংশু সোম মহান খোয়াইকে বলেন, এমনও হতে পারে দেশের অন্য স্থানেও হবিগঞ্জের অস্ত্র জমা পড়েছে। এসব যাচাই-বাছাই ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশনা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।