স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচংয়ে ১৯৭১ সালে নিহত আকল আলীর ছোট ভাই ও যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী সবুজ আলীর উপর হামলা ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কার্টিজ পেপারে দস্তখত নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ১২ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন সবুজ। আসামীদের দুইজন মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত মহিবুর রহমান বড় মিয়ার লোক বলেও জানা গেছে।
গত সোমবার বানিয়াচং থানায় তিনি মামলাটি দায়ের করেন। এর দু’দিন আগে ওই বারোজন মিলে তার উপর হামলা এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দস্তখত আদায় করেছে বলে মামলায় উল্লেখ করেন। দস্তখত নেওয়া কাগজগুলো উদ্ধারের পাশাপাশি এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থাতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আসামীরা হলেন, উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের এড়ালিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে জালাই মিয়া, সফর উদ্দিনের ছেলে আব্দাল বক্স, শাহ হিরণ আলীর ছেলে শাহ আব্দাল, মৃত দৌলত উল্লার ছেলে হারুন মিয়া, নৌশাদ আলীর ছেলে সুহেল মিয়া, ইসমাইল মাস্টারের ছেলে মাহমুদ মিয়া, কলিম উদ্দিনের ছেলে কুরেশ মিয়া, আব্দুর রহমানের ছেলে হেলাল মিয়া, সাজিদ উল্লার ছেলে সেলু মিয়া, নোয়াব উল্লার ছেলে মিনু মিয়া, দৌলত উল্লার ছেলে নিজাম উদ্দিন ও খলিল মিয়ার ছেলে আলফু মিয়া।
এদের মাঝে হারুন মিয়া ও আব্দাল বক্স মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আদেশপ্রাপ্ত মহিবুর রহমান বড় মিয়া মিয়ার লোক বলে জানিয়েছেন বাদী। আবদাল বক্সের মামা খুর্শেদ আলী আদালতে বড় মিয়ার সাফাই স্বাক্ষী দিয়েছেন। এর আগে খাগাউড়া গ্রামের বাসিন্দা ও বড় মিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার পরিচালক ও তথ্য প্রদানকারী একেএম আজাদ ওই দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দশটায় একেএম আজাদের উপর হামলা করে আব্দাল ও হারুনসহ কয়েকজন। পরে পুলিশ গিয়ে আজাদকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দেয়।
সবুজ আলী এড়ালিয়া গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে ও যুদ্ধাপরাধ মামলার স্বাক্ষী। মামলায় উল্লেখ করেন, গত ১৫ আগস্ট জালাই মিয়া ও আবদাল বক্সের বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে তাকে তুলে অভিযুক্ত ওই বারোজন। পরে তাকে মারপিটের পাশাপাশি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ১০০ ও ৫০ টাকার স্ট্যাম্প ও একটি কার্টিজ পেপারে ছয়টি দস্তখত নেয় হামলাকারীরা। পরে ঘটনার দু’দিন পর এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে তিনি বানিয়াচং থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ সেলিম মিয়া। এনিয়ে পুলিশ তদন্তে নেমেছে বলেও জানান তিনি।