ময়লায় অতিষ্ঠ শহরবাসীকে ডাম্পিং স্পটের আশ্বাস

প্রথম পাতা

সাইফ আহছান ॥ হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়াম ও কিবরিয়া অডিটোরিয়ামের মাঝ দিয়ে যাওয়া বাইপাস সড়কের দু’পাশে বিশাল ময়লার স্তুপ। অদূরেই স্কুল-কলেজ, আদালতসহ সরকারি নানা স্থাপনা। আবর্জনা থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধ এই পথে চলাচলকারী যাত্রীদের নিত্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ বলে যাচ্ছিল, ডাম্পিং স্পট হলে অবসান ঘটবে দুর্ভোগের। কিন্তু সেটা হচ্ছে না বিভিন্ন জটিলতায়। তবে এ যাত্রায় কাজটি হবে এবং ইতোমধ্যেই নকশা তৈরীর কাজ চলমান বলে জানালেন মেয়র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় কয়েক বছর ধরে বাইপাস সড়কের দু’পাশে ময়লা ফেলে আসছে হবিগঞ্জ পৌরসভা। দীর্ঘদিনে আবর্জনার স্তুপ ধারণ করেছে বিশাল আকার। এই স্তুপ বড় হচ্ছে প্রতিদিনই। রাস্তায় চলাচলকারী হাজার হাজার পথচারী আর যাত্রীরাতো দুর্ভোগ পোহাচ্ছেনই, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আধুনিক স্টেডিয়ামে আসা খেলোয়াড়রাও অতিষ্ঠ দুর্গন্ধে।
অন্যদিকে, আবর্জনা স্তুপের আশপাশেই রয়েছে হবিগঞ্জ জেলা জজ আদালত, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ, আনসার কর্মকর্তার কার্যালয়, কিবরিয়া অডিটোরিয়ামসহ নানা স্থাপনা। প্রতিদিন রাস্তায় চলাচল করে হাজার হাজার যানবাহন। নাক-মুখে রুমাল গুজেও মুক্তি মিলে না দুর্গন্ধ থেকে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। শীঘ্রই এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা বলছেন, পৌরসভার ডাম্পিং স্পট না থাকায় শহরের ভেতরেই এমন ময়লার স্তুপ তৈরী করা অত্যন্ত উদাসীনতার পরিচয়। এতে পৌর নাগরিকসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আশপাশেই রয়েছে বড় বড় অসংখ্য হাওর। ওই সকল জায়গাতেও অস্থায়ীভাবে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা করা যেত।
হবিগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন কলি বলেন, জেলার ঐতিহ্য এখন আধুনিক স্টেডিয়াম। কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধে এখানে ভেন্যু দিতে সম্মত হয় না কেউ। খেলোয়াড়রাও আসতে চান না নিয়মিত। পাশের দোকানে এক কাপ চা খেতে গেলে শুরু হয় মাছির উপদ্রব। শীঘ্রই এ সমস্যার সমাধান না হলে মিলবে না আধুনিক স্টেডিয়ামের ফল। বৃন্দাবন সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল হাকিম বলেন, ময়লার স্তুপের কারণে বাইপাস সড়কে চলাচলকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশি বাতাস হলে ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে দুর্গন্ধ। শীঘ্রই ময়লার ভাগারটি এখান থেকে সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
কলেজ ছাত্রী শাহীনা আক্তার জানান, হবিগঞ্জ শহরের কোথাও অবসর সময় কাটানোর সুযোগ নেই। আধুনিক স্টেডিয়াম হওয়ার পর বিকেল বেলা এখানে আসতো অনেকেই। কিন্তু আবর্জনার স্তুপের কারণে সেটিও বন্ধ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে পৌরবাসীর আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় দেড় বছর পূর্বে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং রোডের একটি জমি সনাক্ত করে সেখানে ডাম্পিং স্পট তৈরীর উদ্যোগ নেয় হবিগঞ্জ পৌরসভা। কিন্তু স্থানীয়দের বাঁধার মুখে তা হয়ে উঠেনি। এনিয়ে কাজ করছে জেলা প্রশাসনও, তবুও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
তবে এবার আশার কথা জানিয়েছেন হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব পেয়েছি মাত্র এক বছর দুই মাস হল। সবকিছু নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ডাম্পিং স্পটের জন্য ইতোমধ্যেই একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। চলছে নকশা তৈরীর কাজ। পরে তা পাঠানো হবে মন্ত্রণালয়ে। সেখানে দাপ্তরিক কাজ শেষ হলে ভূমি অধিগ্রহন করবে সরকার। আগামী নির্বাচনের পূর্বেই ডাম্পিং স্পট আলোর মুখ দেখবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *