মোঃ আবু হেনা, আজমিরীগঞ্জ থেকে ॥ আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যদের নামে নদীতে মাছ আহরণে যাওয়া জেলেদের নিকট থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে।
এ উপজেলার কালনী-কুশিয়ারা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের অভিযোগ মাসিক চাঁদা না দিলে পুলিশ জাল আটক করে নিয়ে যায়; পরে জাল ছাড়িয়ে আনার জন্য গুণতে হয় চাঁদার পরিমাণ থেকেও বড় অংকের টাকা।
তবে কাকাইলছেও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমানের দাবি এ অভিযোগ সম্বর্কে কিছুই জানেন না তিনি।
গতকাল সরেজমিনে উপজেলার রনিয়া এলাকায় নদী তীরে গেলে দেখা যায়, সেখানে জেলেদের অর্ধশতাধিক নৌকা নোঙর করা। হঠাৎ এক জেলে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেনÑ “খাজনা নেওয়ার লাইগ্যা আইছেন”?
কিসের খাজনা জানতে চাওয়ামাত্রই জেলে উত্তর দেন, “মনে করছিলাম পুলিশ, তারা আমাগো থাইক্যা মাসে মাসে দুইশ’ কইরা ট্যাহা লয়। তাই মনে করছিলাম আপনারা সাদা পোশাকের পুলিশ; ট্যাহা নেওয়ার লাইগ্যা আইছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানান, আগে কালনী-কুশিয়ারা নদী থেকে মাছ আহরণ করে জীবন চলতো হাজারো জেলে পরিবারের। কিন্তু নদীতে মাছের আকাল দেখা দেওয়ায় এখন তাঁদের জীবন চলে কষ্টে-সৃষ্টে। তার উপর নৌ-পুলিশকে দিতে হয় মাসিক চাঁদা। ঠিকমতো চাঁদা না দিলে জাল ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। আবার ধার দেনা করে জালগুলো ছাড়িয়ে আনতে হয়। ফলে এ পেশার প্রতি জেলেরা আগ্রহ হারিয়ে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছেন।
বয়োবৃদ্ধ এক জেলে বলেন, “নদীতে আগের মতন মাছ নাই। দুয়েকটা ধরা পড়লেও তা বেছে আঁধপেট খাওন জুটে না। অহন আবার ইলিশ মাছ ধরার অভিযোগ তুইল্যা জাল নিয়ে যায় পুলিশ। আমরা গরিব মানুষ কই যাইমু” বলে প্রশ্ন করেন তিনি।
এ বিষয়ে কাকাইলছেও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান খোয়াইকে বলেন, “আমি সপ্তাহখানেক আগে এখানে যোগ দিয়েছি। এখন পর্যন্ত নদীতে যাইনি।”
তবে কেউ চাঁদা নেয় কি না তা খতিয়ে দেখবেন বলেও পুলিশের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।