মানসিক ভারসাম্যহীন কর্মকর্তার হাতে শিক্ষা ব্যবস্থা

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেও বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন লাখাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আসলাম খান। তাঁর এমন কান্ডে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম মনিটরিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার সাথে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের অর্থও।
আসলাম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নারী সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণেরও। তবে জেলা শিক্ষা বিভাগ বলছে ওই কর্মকর্তা মানসিক ভারসাম্যহীন এবং তাঁর কারণে যে কোন সময় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে।
জানা গেছে, গতকাল দুপুরে উপজেলা পরিষদ এলাকায় চায়ের দোকানে অফিস সহকারি হারুন মিয়ার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হন শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম খান। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাঁকে নিবৃত করেন।
এদিকে, গত ১১ জুলাই উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জান্নাতুন নাহার তাঁর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ২৬ জুন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম খান লাখাই উপজেলায় যোগদান করেন। এরপর থেকে কার্যালয়ে বসে ধূমপান করা, জান্নাতুন নাহারকে অফিস থেকে বের করে দেওয়াসহ বিভিন্ন সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হত্যার হুমকি দেন। তিনি তার জীবনের নিরাপত্তা চান।
পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা সুলতানা বিষয়টি তদন্ত করে ১৩ জুলাই জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি প্রতিবেদন জমা দেন। এতে তিনি অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মোঃ আসলাম খানের ভয়ে একাডেমিক সুপারভাইজার জান্নাতুন নাহার নিরাপত্ত্বাহীনতার শঙ্কায় রয়েছেন। তিনি পেশাগত আচরণ করেন না। ফলে দাপ্তরিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁর ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন ইউএনও।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য খোয়াইয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসব বিষয়ে তিনি কথা বলতে চান না।
এদিকে, গত ১৯ জুলাই জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আসলাম খানকে প্রত্যাহারের জন্য মহাপরিচালক বরাবরে লিখিতভাবে জানান। এতে তিনি আইন শৃংখলার অবনতি হতে পারে উল্লেখ করে বলেন, তাঁর আচরণ দৃষ্টে মনে হচ্ছে তিনি ভারসাম্যহীন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ তাঁর আচরণে অসন্তুষ্ট। তাই তাঁকে লাখাই উপজেলা থেকে প্রত্যাহার করা সুপারশি করছি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল্লাহ খোয়াইকে বলেন, আসলাম খানকে প্রত্যাহারের জন্য জুলাই মাসে মহাপরিচালক বরাবর লিখিত সুপারিশ করেছি। তবে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
তিনি আরও জানান, মোঃ আসলাম খান দুই মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত। মাস শেষে উপজেলায় এসে বেতন উত্তোলন করে নিয়ে যান। আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই। তিনি মাদকাসক্ত বলেও মনে হচ্ছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *