আরেক স্বপ্নের প্রতিফলন

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর ছিল হবিগঞ্জবাসীর জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। এদিনে, নিউফিল্ডে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কি দিয়ে যাবেন জেলাবাসীকে তিনি? এমন প্রশ্ন সর্বত্র। অবশেষে অভাবনীয় চার দাবি উত্থাপন করলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু জাহির এমপি। মেডিকেল কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাল্লা স্থলবন্দর আর শায়েস্তাগঞ্জকে উপজেলায় বাস্তবায়ন।
জনতার ঢলকে নিরাশ করেননি প্রধানমন্ত্রী। দাবি’র পরিপ্রেক্ষিতে দিয়ে দিলেন প্রতিশ্রুতিও। এরপর শুরু হয় স্বপ্নের প্রহর। একে একে বাস্তবায়ন হতে থাকে প্রতিশ্রুতিগুলো। কয়েক বছর পরই প্রতিষ্ঠা পায় শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ, শায়েস্তাগঞ্জ হয় দেশের সর্বশেষ উপজেলা, চলমান বাল্লা স্থলবন্দরের কাজও। অবশেষে হবিগঞ্জে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের বিল পাশ হওয়ার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর চার প্রতিশ্রুতি।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিলটি প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নিষ্পত্তি হয়।
হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিলটি গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের ২৩ জুন বিলটি সংসদে উত্থাপিত হলে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
স্থায়ী কমিটি গত ৭ সেপ্টেম্বর সংসদে বিলটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করে। এই বিলে ৫৪টি ধারা হয়েছে। এতে সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, প্রবর্তন, সংজ্ঞা ছাড়াও আচার্য, উপাচার্যের দায়িত্ব-কর্তব্য, ট্রেজারার, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং অর্থ কমিটি সম্পর্কিত বিধান আছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারটি অনুষদ থাকবে বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছ। অনুষদগুলো হলো- কৃষি অনুষদ, মৎস্য অনুষদ, প্রাণিচিকিৎসা ও প্রাণিসম্পদ বিজ্ঞান অনুষদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এই খবর জানার পরই হবিগঞ্জে বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা। অনেকেই ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীসহ হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহিরকে।
হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের বড় অর্জন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসাবে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাশ করা হয়েছে। এখন আমরা কাজ করব এটি দ্রুত বাস্তবায়ন ও দৃশ্যমান করতে। হবিগঞ্জবাসীর বহু প্রত্যাশিত বিশ্ববিদ্যালয়টি অচিরেই বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জহিরুল হক শাকিল বলেন, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হওয়া হবিগঞ্জবাসীর জন্য বড় অর্জন। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে অত্র অঞ্চলের শিক্ষানগরী বা শিক্ষা কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠবে হবিগঞ্জ। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এমপি আবু জাহির এর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আলী আজগর জানান, হবিগঞ্জবাসী এমনিতেই শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে ছিল। এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন অনেক বড় হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে হবিগঞ্জ জেলা এগিয়ে যাবে অনেক দূর।
বৃন্দাবন সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব তার প্রতিক্রিয়া বলেন, হবিগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় হবে এটি ছিল স্বপ্ন। এখন তা বাস্তব। তবে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাতে আধুনিক ও যুগপযোগী হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এদিকে, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এমপি আবু জাহির এর জন্য জেলার প্রত্যেক মসজিদে দোয়া এবং মন্দিরে প্রার্থনার অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা হবিগঞ্জবাসীকে এই উপহার দিয়েছেন এবং এর পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির। তাই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির এর জন্য আজ পবিত্র জুম্মার পর সকল মসজিদে দোয়া এবং সুবিধাজনক সময়ে মন্দিরগুলোতে প্রার্থনার অনুরোধ জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *