স্টাফ রিপোর্টার ॥ দুই বছরের মারিয়া শীত বাড়ার কারণে সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছিল। বাবা ব্যস্ত থাকায় মা ছমিরুন বেগম গতকাল সোমবার তাকে নবীগঞ্জের পানিউমদা বাজারে পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সাথে ছিলেন মারিয়ার চাচী হালিমাও।
ডাক্তার দেখানোর পর বিকেলে একটি সিএনজি অটোরিক্সাযোগে মুড়াউড়ায় নিজ গ্রামে ফিরছিলেন। কিন্তু এই ফেরা যে তাদের শেষ ফেরা তা কি তারা জানতেন। না জানারই তো কথা। জানতো না দুই বছরের শিশু মারিয়াও।
গতকাল সোমবার তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহগুলো দেখে উপস্থিত জনতার চোখে জল নামে। মুড়াউড়া গ্রামের পাহাড়ে অবস্থিত আবু তাহেরের বাড়িতে যখন এক সাথে তিনটি মরদেহ যায়, তখন সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য।
মারিয়ার বেঁচে থাকা একমাত্র বোন কান্নায় বার বার মুর্ছা যাচ্ছিল। স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে হারিয়ে আবু তাহেরের অবস্থা পাগল প্রায়। তার ভাই আবু শ্যামা পেশায় রাজমিস্ত্রী। তিনিও স্ত্রী হালিমা বেগমের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আশপাশের লোকজন এসে তাদেরকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করেন। রাতেই তিনটি মরদেহ দাফন হয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলা দায়ের করবে না মর্মে আবেদন করলে ময়নাতন্ত ছাড়াই মরদেহগুলো গ্রহণ করে দরিদ্র এই পরিবার।
এর আগে দুুর্ঘটনার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন মারিয়ার চাচা ও হালিমার স্বামী আনু মিয়া। শতশত মানুষকে পাস কাটিয়ে তিনি ঢুকে পড়েন গাড়ির নীচে। খুঁজতে থাকেন স্ত্রী ও সন্তানতুল্য ভাতিজিকে। বিলাপ করতে থাকেন কাঁদামাখা শরীর নিয়ে। এরপর দমকল বাহিনীর কর্মীরা তাকে সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসেন।
আনু নিয়া জানান, আমার স্ত্রী বলেছিল আসতেছি। মারিয়া বলেছিল চাচ্চু আসছি। এর কিছুক্ষণ পরই শুনতে পেলাম তারা মারা গেছে। এসব বলতে বলতে তিনি আবারও কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন ঘটনাস্থলে।